বাঙালিনিউজ, বিনোদনডেস্ক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত হলো তিন দিনের বঙ্গ সম্মেলন। গত ৪ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত এই ৪৪তম বঙ্গ সম্মেলন শেষ হয়েছে। সম্মেলনে যোগ দেন বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক সঙ্গীত ও অভিনয় শিল্পী। তারা সবাই সেখানে হায়াত রিজেন্সি নামের একটি পাঁচতারা হোটেলে উঠেছিলেন।
স্থানীয় সময় গতকাল ০৬ জুলাই ২০২৪ রোজ শনিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে হঠাৎ ওই হোটেলে আগুন লাগার সংকেত বেজে উঠল। এই শব্দ বেজেই চলেছে। থামার কোনো লক্ষণ নেই। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। সবাই যার যার মতো করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করেন।
বেরিয়ে পড়েন নিজেদের রুম থেকে। এমনই এক উদ্বেগজনক অবস্থায় গতকাল ০৬ জুলাই শনিবার ভোর কেটেছে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের, যা রীতিমতো ভয়াবহ আতঙ্কের বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী।
নর্থ আমেরিকার এই বঙ্গ সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে সংগীতশিল্পী অদিতি মহসীন ও অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় যান। স্থানীয় সময় ৪, ৫ ও ৬ জুলাই তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ভারত থেকে যোগ দেন স্বস্তিকা মুখার্জি, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, সৌরসেনী মৈত্র, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, অর্জুন চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, উজান গঙ্গোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, অরিন্দম শীল, ব্যান্ড ফসিলস, সোমলতা ও ইমন চক্রবর্তী।
সবাই সেখানে হায়াত রিজেন্সি হোটেলে উঠেছিলেন। তিন দিনের এই সম্মেলনে ভালোই সময় কাটছিল তাঁদের। কিন্তু ভোর রাতে হঠাৎ আগুন–আতঙ্কে সবাই ভীত-স্বন্ত্রস্থ হয়ে পড়েন।
আজ ০৭ জুলাই ২০২৪ রোজ রোববার প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে চঞ্চল চৌধুরী শিকাগো থেকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভোরবেলা হোটেলের প্রতিটি রুমের অ্যালার্ম বেজে গেল। কেউ হয়তো রুমে সিগারেট খেয়েছিল, ওইটা নিয়ে। কলকাতা ও ঢাকা থেকে একটা বিশাল টিম এসেছি। সবাই শুধু পাসপোর্ট নিয়ে বের হতে পারলেই বেঁচে যায়। লাগেজ রেখে নিচে নেমে পড়ি। লিফট বন্ধ হয়ে গেল। পরে সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয়। এই অ্যালার্ম ২০ মিনিটের মতো বাজতে থাকল। তারপর থামল। এর মধ্যে সবাই লবিতে জড়ো হলেন। পরে অ্যালার্ম যখন থামল, তখন সবাই আবার সিঁড়ি বেয়ে যার যার রুমে চলে গেলেন।’
শিকাগো থেকে চঞ্চল আরো বলেন, ‘পরে জানতে পেরেছি, এটা কারিগরি ত্রুটি ছিল, কোনো একটা কারণে বেজে ওঠে। সাধারণত হোটেলে ধূমপান করলে এভাবে বেজে ওঠে। পুরোপুরি টেকনিক্যাল সমস্যা। ওই ভোর রাতে রিসিপশনেও কাউকে পেলাম না। যখন অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে গেল, যার যার মতো করে যার যার রুমে চলে গেলাম আরকি।’
জানা গেছে, কেউ তখন গভীর ঘুমে, কেউ রাতের পার্টি সেরে মাত্র ঘুমোতে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই হইচই কাণ্ড! আগুন লাগার সংকেত শুনে রীতিমতো আতঙ্কিত সবাই! রাতের পোশাকেই হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে প্রাণভয়ে দৌড়াচ্ছেন সবাই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অরিন্দম শীল জানান, গরম পোশাক গায়ে না জড়িয়েই পাঁচতলার হোটেল রুম থেকে নিচে নামেন তিনি। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় থেকে সোহিনী—প্রাণ বাঁচানোর জন্য দৌড় লাগালেন সবাই।