কোপা আমেরিকা ফুটবল ২০২৪
বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক
আজ ০৭ জুলাই ২০২৪, রোজ রবিবার, বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় কোপা আমেরিকা কাপ ২০২৪ এর কোয়ার্টার ফাইনাল মাচ্যে ব্রাজিল ও উরুগুয়ে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামে। ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিল অধিকাংশ সময় বল দখলে রাখলেও পুরো ম্যাচে কোনো গোল করতে পারেনি। গোল করতে পারেনি উরুগুয়েও। ফলে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। আর এতেই ব্রাজিলের কপাল পোড়ে। কারণ, টাইব্রেকারে দুই বল মিস করে উরুগুয়ের কাছে ৫-৩ গোলে পরাজিত হয়ে ব্রাজিল চোখের জলে মাঠ ছাড়ে। ফুটবল সুপার পাওয়ার খ্যাত ব্রাজিল দীর্ঘদিন ধরেই তার খ্যাতির ওপর অবিচার করছে এবং দর্শক ও ভক্তদের বারবার হতাশ করছে তারা।
আজ সকালে ব্রাজিল ও উরুগুয়ের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচজুড়ে ছিল শরীরী লড়াই, রেফারিকে তটস্থ ছিলেন সর্বক্ষণ। ফলে হলুদ কার্ড-লাল কার্ড পেয়েছেন একাধিক খেলোয়াড়। বল দখলের লড়াইও ছিল। তবে সেই লড়াইয়ে সফল ছিল ব্রাজিল। কারণ, ম্যাচের ৬০ ভাগ সময় বল তাদের দখলে ছিল। কিন্তু কোনো গোল করতে পারেনি। ৪০ ভাগ সময় বল উরুগুয়ের দখলে ছিল। কিন্তু তারাও কোনো গোল করতে পারেনি। উরুগুয়ে ১২টি শট নিয়ে ১টি লক্ষ্যে রাখতে পারে, ব্রাজিল ৭টি শটের ৩টি লক্ষ্যে রাখলেও, গোলের দেখা পায়নি। ফলে গোল শূন্য খেলা শেষ হয়। ম্যাচ টাইব্রেকারে চলে যায়। আর এতে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়।
ব্রাজিল ও উরুগুয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধের শুরু থেকেই দুই দল বল দখলের লড়াইয়ের পাশাপাশি শারিরীক শক্তির লড়াই চালিয়েছে। ফলে ম্যাচের ১৩ মিনিটেই ৫টি ফাউল ধরা পড়েছে। তবে ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে গোলের একটা সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি রাফিনহা। লুকাস পাকোতা হেড দিয়ে পাস বাড়িয়েছিলেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের দিকে। বল পেয়েই দ্রুত প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের দিকে এগিয়ে গিয়ে রাফিনিয়া প্রতিপক্ষের বক্সে গিয়ে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে চিপ শট নিয়েছিলেন। কিন্তু এক হাতে বল ঠেকিয়ে তাকে হতাশ করেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরও একটি মিস করেন রাফিনিয়া। ফলে ব্রাজিল একাধিক সুযোগ পেলেও, গোল করতে পারেনি। প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পরই দলে একটা পরিবর্তন আনেন উরুগুয়ে কোচ বিয়েলসা। মাতিয়াস ভিনার জায়গায় সেবাস্তিয়ান কেকারেসকে নামান তিনি। একটু পরে হলুদ কার্ড দেখেন ম্যানুয়েল উগার্তে। হাতে বল স্পর্শ করায় তাকে হলুদ কার্ড দেন রেফারি।
ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে গোল পেতে পারতো উরুগুয়ে। ফেদে ভালভার্দের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল ঘুরিয়ে দেন কেকারেস। তবে তার শট রুখে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকার। এর আগে ম্যাচের ৪৭তম মিনিটেও গোল মিস করেছিলেন আরাউহো। ৬০তম মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন উরুগুয়ের নিকোলাস দে লা ক্রুজ।
উরুগুয়ে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় ম্যাচের ৭৪তম মিনিটে। বল নিয়ে রাফিনিয়া এগোচ্ছিলেন দ্রুতগতিতে। তাকে ঠেকাতে গিয়ে কড়া ট্যাকল করে বসেন উরুগুয়ের নাহিতান নান্দেজ। প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে সংশয়ে থাকা রেফারি সহায়তা চান ভিএআর-এর। তাতে ধরা পড়ে নান্দেজের কড়া ট্যাকল। দেরি না করে লাল কার্ড দেখিয়ে তাকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন রেফারি।
ম্যাচের ৮৪ মিনিটে এনড্রিকের শট রুখে দলকে আরেকবার রক্ষা করেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক। ৮৭ মিনিটে আক্রমণ করেছিলেন ভালভার্দে। তবে বাধা পায় সেটাও। বাকি সময়েও একই ধারায় খেলে নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্যই থাকে দুই দল। যোগ করা সময়েও একই অবস্থা থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে এডার মিলিটাও এবং ডগলাস লুইসের দুটি ব্যর্থ শটে স্বপ্নভঙ্গ হয় ব্রাজিলের। বিপরীতে টাইব্রেকারে সব কটি বলে গোল করে ৫-৩ ব্যবধানে সেমিফাইনালে উঠে যায় উরুগুয়ে। সূত্র: অনলাইন নিউজ।