বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
গত ৪ জুলাই ২০২৪, রোজ বৃহস্পতিবার, যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্স নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। সব শেষ ফলাফলে প্রকাশ, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এই নিম্মকক্ষে ৬৫০ আসনের মধ্যে লেবার পার্টি ৪১২টি আসনে জয়লাভ করেছে। ১৪ বছরের টানা শাসকদল কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন।
সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কোনো দলের প্রয়োজন ৬৫০ আসনের মধ্যে ৩২৬ আসন। লেবার পার্টি তার চেয়ে অনেক বেশি আসন লাভ করেছে। ফলে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতায় ক্ষমতায় ফিরলো লেবার পার্টি। আর ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিদায় নিলো কনজারভেটিভ পার্টি।
গতকাল ০৫ জুলাই শুক্রবার নির্বাচনের এই ফলাফল ঘোষণার পর, রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্রাসাদে গিয়ে দেখা করে পদত্যাগ করেন কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তার পদত্যাগের পর রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার। ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধান রাজা তৃতীয় চার্লস কিয়ার স্টারমারকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন।
স্টারমার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বগ্রহণের পর তাঁর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠন করেন। যুক্তরাজ্যের এই নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন র্যাচেল রিভস। দেশটির নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে গতকাল ০৫ জুলাই শুক্রবার তাঁর নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইতিহাস গড়েছেন র্যাচেল। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হলেন তিনি।
নতুন সরকারে অ্যাঞ্জেলা রায়নারকে উপপ্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ পেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ ডেভিড ল্যামি।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইভেত্তে কুপার। জন হ্যালি প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ব্রিজেত ফিলিপসন শিক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্ব পেয়েছেন ওয়েস স্টিটিং, এড মিলিব্যান্ড জ্বালানিমন্ত্রী, শাবানা মাহমুদ বিচারমন্ত্রী, জোনাথন রেনল্ড বাণিজ্যমন্ত্রী, লিজ কেন্ডাল শ্রম ও কারামন্ত্রী, স্টিভ রিড পরিবেশমন্ত্রী, পিটার কাইলি বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি–বিষয়কমন্ত্রী, লিসা নন্দী সংস্কৃতি–বিষয়ক মন্ত্রী, লুইস হাই পরিবহন মন্ত্রণালয়, লিজ কেন্ডাল কর্ম ও পেনশন বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নির্বাচনে জয়ী কোনও ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপিকে মন্ত্রিসভার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ডাকা হয়নি। লেবার পার্টির নতুন মন্ত্রিসভায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার এমপির কাউকে ডাকা হয়নি। ব্রিটেনজুড়ে এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিভিন্ন আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গত নির্বাচনে বিজয়ী সেই চারজন ছাড়া আর কেউ জয়ী হতে পারেননি। ব্যালটে প্রমাণ হয়েছে, এবারের নির্বাচনে নতুন কোনও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি হতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা এখনও যুক্তরাজ্যে কোনও মন্ত্রী পায়নি। কমিউনিটিতে এবার আশা ছিল, লেবার পার্টির মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো অন্তত একজন বাংলাদেশি ঠাঁই পেতে পারেন।
বাংলা ট্রিবিউন জানায়, বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ক্রয়েডন কাউন্সিলে লেবার গ্রুপের চেয়ার কাউন্সিলার মো. ইসলাম বলেন, ১৪ বছর পর আমাদের দল ক্ষমতায় এসেছে। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রিসভার শুরুতে সবচেয়ে যোগ্যরা স্থান পাবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে কেবিনেটে না হলেও অন্য মন্ত্রিসভার পদগুলোতে বাংলাদেশি এমপিদের সিনিয়ররা জায়গা পাবেন বলে আমরা আশাবাদী। ব্যক্তিগতভাবে আমি মন্ত্রিসভার পরবর্তী পুনর্বিন্যাস পর্যন্ত আশাবাদী।