বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক
গতকাল ২৯ জুন ২০২৪ রোজ শনিবার রাতে, বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর প্রথম ম্যাচে ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে সুইজারল্যান্ড।
সুইজারল্যান্ড নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে এই প্রথম বড় টুর্নামেন্টে (বিশ্বকাপ ও ইউরো) টাইব্রেকার ছাড়া কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল। সুইজারল্যান্ডকে জয় এনে দেওয়া গোল দুটি করেছেন রেমো ফ্রেলার ও রুবেন ভার্গাস।
ইতালির খেলোয়াড়রা ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের গোল পোস্টে মাত্র একটি শট করেছে। আসলে ম্যাচের প্রথমার্ধে ইতালিকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধেও অনেকতা নিষ্প্রভ ছিল ইতালির আক্রমণভাগ।
অন্যদিকে, ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ উজ্জীবিত ছিল সুইজারল্যান্ড। তাদের সামনে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইতালি। বিরতির আগে একটি এবং বিরতির পরে আরো একটি, মোট দুইটি গোল করে শিরোপাধারী ইতালিকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়েছে সুইজারল্যান্ড।
শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে সুইজারল্যান্ড। ম্যাচের ২৪তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ হারান সুইজারল্যান্ডের ব্রিল এমবোলো। ওয়ান-অন-ওয়ানে তার শট সহজেই ঠেকান ইতালির গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি ইতালির গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা। এ সময় প্রথম গোল পায় সুইসরা। বাঁ দিক থেকে সুইস খেলোয়াড় ভার্গাসের পাস বক্সে ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাম পায়ে ভলি করেন নটিংহাম ফরেস্টের সুইস মিডফিল্ডার ফ্রয়লার। তার জোরাল শট পা বাড়িয়ে রুখে দিতে চেয়েছিলেন ইতালির গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা। কিন্তু বল তার পায়ে লাগলেও, বলটি প্রতিরোধ করতে পারেন নি তিনি। বলটি খুব বেশি দিক বদল না করে জালে জড়িয়ে যায়। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। সুইজারল্যান্ডের পক্ষে প্রথম গোল করে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নেন রেমো ফ্রয়লার। ওই গোলে অবদান রাখেন তাঁর সতীর্থ রুবেন ভার্গাস। বিরতির আগমুহূর্তে সুইজারল্যান্ডের রেইডারকে গোলবঞ্চিত করেন ইতালির গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ২৭ সেকেন্ডে ব্যবধানে, আরো একটি গোল করে ২-০ গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সুইসরা। সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ভার্গাস। বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া কোনাকুনি শট সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও রুখতে পারেননি ইতালি গোলরক্ষক দোন্নারুম্মা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ভার্গাস এই গোল করার পর, ২-০ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড।
অবশ্য শনিবার রাতের এই ম্যাচে, দুই দলই প্রায় সমান বল দখলে রেখেছিল। তবে সুইজারল্যান্ড গোলের জন্য ১৬টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে ৪টি, যার দুটি সফল হয়। অন্যদিকে, ইতালির ১১ শটের মাত্র একটি লক্ষ্যে ছিল।
ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে লক্ষ্যে একমাত্র শটটি রাখতে পারে ইতালি, মাতেও রেতেগির শট ঠেকান ইয়ান সমের। নিকোলো ফাগিওলির একটি ক্রসে সুইস ডিফেন্ডার ফাবিয়ান শারের মাথায় লেগে বল পোস্টে লাগে। ৭৬তম মিনিটে জানলুকা স্কাম্মাক্কার প্রচেষ্টাও পোস্টে বাধা পায়। যদিও তিনি অফসাইডে ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
বাকি সময়ে আর কারো উল্লেখযোগ্য কোনো সুযোগ মেলেনি। ফলে ইতালিকে ২-০ গোলে হারিয়ে, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠে সুইসরা। দারুণ জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে সুইসরা। অন্যদিকে, দুই দশক পর আবারও ইউরোপ মহাদেশসেরা–টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নিলো ইতালি।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোর শেষ আটে উঠল সুইজারল্যান্ড। সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ইংল্যান্ড অথবা স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে খেলবে তারা।
উল্লেখ্য, ৩১ বছর পর ইতালির বিপক্ষে প্রথম জয় পেল সুইজারল্যান্ড। সবশেষ ১৯৯৩ সালের মে মাসে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১-০ গোলে ইতালিকে হারিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। তারপর দুই দল ১১ বার লড়াই করেছে। এর মধ্যে ৬টি ম্যাচে ড্র হয়েছিল এবং ৫টি ম্যাচে সুইসরা হেরেছিল। সূত্র: অনলাইন নিউজ।