বাঙালিনিউজ, বিজ্ঞানডেস্ক
চীনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চ্যাঙ্গি-৬ চন্দ্র অন্বেষণ মিশন সম্পূর্ণ সফলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই প্রোবটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে।’ চাঁদের দূরবর্তী অংশ দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা বহনকারী চীনা অনুসন্ধান যান ‘চ্যাঙ্গি-৬ মঙ্গলবার ২৫ জুন ২০২৪, পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। প্রযুক্তিগতভাবে জটিল ৫৩ দিনের এই মিশনকে বিশ্বের প্রথম মিশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকাল ২টায় চীনের উত্তরের স্বশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়ার অঞ্চলের মরুভূমিতে মহাকাশযানটি অবতরণ করেছে। মহাকাশযান পৃথিবীতে নেমে আসার পর মঙ্গলবার চীন তার চ্যাঙ্গি-৬ চন্দ্র অনুসন্ধান মিশনকে ‘সম্পূর্ণ সফল’ হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে।
এটি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরবর্তী এলাকা থেকে মাটি এবং পাথরের নমুনা বহন করে নিয়ে এসেছে। এই এলাকা কখনো পৃথিবী থেকে দেখা যায় না। এটি রুক্ষ, অন্ধকার অঞ্চল, প্রাচীন লাভা প্রবাহের কারণে এই পৃষ্ঠদেশ অমসৃণ। বিজ্ঞানীরা এর নমুনা নিয়ে গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
এর অর্থ হল সেখানে সংগ্রহ করা উপাদানগুলো আমাদেরকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে কীভাবে চাঁদ তৈরি হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে।
চ্যাঙ্গি-৬ চলতি বছর ২০২৪ সালের ৩ মে হাইনান দ্বীপ প্রদেশের একটি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং প্রায় এক মাস পরে চাঁদের বিশাল দক্ষিণ মেরুর আইটকেন বেসিনে নেমে আসে। এটি নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি ড্রিল এবং রোবোটিক হাত ব্যবহার করেছে, রুক্ষ পৃষ্ঠের কিছু ছবি তুলে নিয়ে এসেছে এবং ধূসর মাটিতে একটি চীনা পতাকা স্থাপন করে এসেছে।
গত ৪ জুন ২০২৪ মঙ্গলবার, অনুসন্ধান যানটি চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে ফিরতি যাত্রা শুরু করে। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এটিকে ‘মানব চন্দ্র অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি অভূতপূর্ব কীর্তি’ বলে অভিহিত করেছে।
চীনের ‘মহাকাশ স্বপ্ন’ এর পরিকল্পনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে উচ্চ গতি পেয়েছে। গত এক দশকে বেইজিং তার মহাকাশ কর্মসূচিতে বিপুল সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী মহাকাশ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়াকে ধরার প্রয়াসে উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এটি একটি স্পেস স্টেশন তৈরি করেছে, মঙ্গল ও চাঁদে রোবোটিক রোভার অবতরণ করেছে এবং কক্ষপথে স্থাপিত নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে মহাকাশচারীদের পাঠানোর জন্য তৃতীয় দেশ হয়ে উঠেছে। চীন ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে একটি ক্রু মিশন পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করছে, এর অংশ হিসেবে চন্দ্র পৃষ্ঠে একটি ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে। সূত্র : বাসস।