বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
ক’দিন আগে, ১৯ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত দু’দিনব্যাপী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়া সফরকালে দুটি দেশের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার এই চুক্তির মাত্র একদিন পর, আজ ২২ জুন ২০২৪ শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানবাহী একটি রণতরি। পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন এই রণতরি ত্রিদেশীয় সামরিক মহড়ায় অংশ নেবে।
রণতরিটি দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানোর খবর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে দেশটির নৌবাহিনী। তাতে বলা হয়েছে, আজ ২২ জুন শনিবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান নৌঘাঁটিতে পৌঁছেছে মার্কিন নৌবাহিনীর রণতরি থিওডোর রুজভেল্ট। দক্ষিণ কোরিয়ার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই রণতরিটির আগমনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া জোটের শক্তিশালী যৌথ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আরও স্পষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির জবাব দিতে দেশ দুটি যে দৃঢ় সংকল্প, তা বুঝিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই রণতরির চলতি জুন মাসেই দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে একটি যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গত বছর ২০২৩ সালের আগস্টে এক সম্মেলনে এই তিন দেশের নেতারা প্রতিবছর সামরিক প্রশিক্ষণ মহড়া আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছিলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন এক সময় মার্কিন রণতরি পৌঁছাল, যখন একদিন আগে গত ২১ জুন দেশটিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। চলতি সপ্তাহে মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিবাদ জানাতে তাঁকে তলব করা হয়। ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন।
দীর্ঘ ২৪ বছরের মধ্যে প্রথমবার উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেন তার প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, বিশ্বে একঘরে হয়ে থাকা দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি। এর জবাব হিসেবে তারা ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার কথা বলার পর পরই ভিয়েতনাম সফররত অবস্থায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল ২১ জুন শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়াকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এর পরিণাম ভালো হবে না। তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, যদি যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাহলে বড় ভুল হবে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বৈরী সম্পর্ক রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশটির সীমান্তে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সেনাসদস্যরা। এ ছাড়া সম্প্রতি একে অপরের ভূখণ্ডে বেলুন পাঠানোর মতো কর্মকাণ্ডেও জড়িয়েছে দুই দেশ। সূত্র: আল জাজিরা, ইন্টারনেট নিউজ।