বাঙালিনিউজ, দেশডেস্ক
নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লায় সম্প্রতি গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এক তরুণী। তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করা এক ব্যক্তি সহ তার কয়েকজন সহযোগী জোরপূর্বক হাত পা ও মুখ বেঁধে তাকে গণধর্ষণ করে। গণধর্ষিতা ওই তরুণী একজন গার্মেন্টসকর্মী।
এ ঘটনায় তরুণীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ধর্ষকদের মধ্যে শিবলু সাহা (২৫) ও সুমনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২০ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লার পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এই গণধর্ষণের মূলহোতা ভুয়া প্রেমিক আবু হাসান ও অপর সহযোগী শাকিল পলাতক রয়েছে। গতকাল ২১ জুন শুক্রবার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের করেছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নুরে আযম মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গণধর্ষণের ঘটনা বেশ কয়েকদিন আগে ঘটে। লোকলজ্জার ভয়ে ওই তরুণী ঘটনাটি গোপন করে রেখেছিল। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে মোটা অংকের টাকা চেয়ে এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল ধর্ষকরা। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই গার্মেন্টসকর্মী অভিযোগ দায়ের করার পর পরই অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লার মুসলিমনগর নয়াবাজার সাত ভাই মার্কেট সংলগ্ন এলাকার ইউনুস মিয়ার ছেলে আবু হাসান (২৯) এর সঙ্গে কথিত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে একই এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বাসবাসকারী এক তরুণীর। সে বিসিক শিল্পনগরীর একটি গার্মেন্টে চাকরি করে। আবু হাসান আর ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক অনেকদিন গড়ায়। যার কারণে তরুণী আবু হাসানকে বিয়ের কথা বলে। কিন্তু হাসান বিয়ে করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
এ অবস্থায় পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে চলতি বছরের ৩০ মার্চ রাতে তরুণীকে কেনাকাটা করে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পঞ্চবটি গুলশান রোড এলাকার বিকাশ বাবুর ছেলে শিবলু, একই এলাকার শাকিল, সুমন মিলে আবু হাসানের কথা বলে তরুণীকে ডেকে শহরের চাষাঢ়ায় নিয়ে যায়। পরে তরুণীকে সিএনজি দিয়ে ঘুরিয়ে গভীর রাতে শিবলু সাহার বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে তরুণীর হাত পা এবং মুখ বেঁধে সারারাত তারা পালাক্রমে ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করে। তার পরদিনও গণধর্ষণের পর রাত ৮ টার পর তরুণীকে হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। এই ঘটনার কয়েকদিন পর ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়েছে এই কথা বলে ধর্ষকরা তরুণীকে ব্লাকমেইল করতে থাকে। তারা ধারণকৃত ভিডিওটি পরিবারের লোকজনসহ ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। লোকলজ্জার ভয়ে তরুণীটি বেশ কিছু টাকাও দেয়।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ধর্ষকরা ফের ব্লাকমেইল করলে আইনের আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওই তরুণী। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দুজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পর, গতকাল ২১ জুন ওই তরুণী মামলা দায়ের করে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।