বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে একসঙ্গে ঘর করার পর, এক দম্পতি একসঙ্গে স্বেচ্ছা মৃত্যুবরণ করেছেন। জ্যান (৭০) ও ইলস (৭১) নামের এই স্বামী-স্ত্রী ছিলেন নেদারল্যান্ডসের বাসিন্দা। চলতি বছর ২০২৪ সালের জুনের শুরুতে এই দম্পতি একসঙ্গে স্বেচ্ছায় সহমরণের পথ বেছে নেন।
কেন এই দম্পতি শেষ জীবনে এসে সহমরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, মৃত্যুর আগে গণমাধ্যমকে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁরা। মৃত্যুর তিনদিন আগে এই দম্পতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির লিন্ডা প্রেসলির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেন।
বিবিসিকে তাঁরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ পাঁচ দশক দু’জন একসঙ্গে ছিলেন। তাঁরা তাদের সংসার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন নৌকায়। আর জীবনের শেষ ভাগে এসে একটি ভ্যানে থাকতেন। কারণ, তাঁদের ইটপাথরের বাড়িতে থাকতে মন চাইত না। যেহেতু নৌকায় থাকতেন, তাই নৌকা দিয়ে পরিবহণের ব্যবসায় নেমেছিলেন স্বামী জ্যান।
কিন্তু ভারী কাজ করতে করতে এক সময় স্বামী জ্যানের পিঠে ব্যথার সৃষ্টি হয়, যা তাঁকে প্রচণ্ড কষ্ট দিত। ২০০৩ সালে পিঠে ব্যথার জন্য একটি অস্ত্রোপচারও করেছিলেন জ্যান। কিন্তু এতে কাজ হয়নি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় জ্যান আর বাঁচতে চাচ্ছিলেন না।
জ্যান বিবিসিকে জানান, তাঁর এই অসুস্থতার মধ্যেই ২০২২ সালে তাঁর স্ত্রী ইলসের মস্তিস্কে ‘স্মৃতিভ্রমের’ সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে তাঁর সেরে উঠার কোনও সম্ভাবনা ছিল না।
স্ত্রী ইলসের স্মৃতিভ্রমের সমস্যা দেখা দেওয়ার পর, তাঁরা দু’জন একসঙ্গে মৃত্যুবরণের সিদ্ধান্ত নেন। এ ব্যাপারে নিজেদের একমাত্র ছেলের সঙ্গেও কথা বলেন জ্যান ও ইলস দম্পতি। এরপর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জুনে তাঁরা একসঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন।
বিবিসি জানিয়েছে, স্বেচ্ছা মৃত্যুতে তাদের সহযোগিতা করেন দু’জন চিকিৎসক। মৃত্যুর জন্য তাঁদের দু’জনকে দেওয়া হয় প্রাণনাশী ওষুধ। উল্লেখ্য, নেদারল্যান্ডসে স্বেচ্ছায় মৃত্যু একটি বৈধ পন্থা। তবে এ ধরণের ঘটনা বিরল। তা সত্ত্বেও নেদারল্যান্ডসের অনেক দম্পতি প্রতি বছর স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন বা সহমরণের পথ বেছে নেন। সূত্র: বিবিসি