হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জয় আর্জেন্টিনার

Spread the love

বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক

আজ ১৫ জুলাই ২০২৪, রোজ সোমবার, যুক্তরাষ্ট্রের হার্ড রক স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকা-২০২৪ এর ফাইনাল ম্যাচে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে বদলি হিসেবে নামা

আর্জেন্টিনার লাওতারো মার্তিনেজের দেওয়া ম্যাচের ১১২ মিনিটের গোলে কলম্বিয়াকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে কোপা আমেরিকার রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। এর আগে ১৫টি শিরোপা জিতে উরুগুয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডে নাম ছিল আর্জেন্টিনার।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে আজ কোপা আমেরিকা জয়ের ফলে, পর পর তিনটি আন্তর্জাতিক ফুটবলের শিরোপা জিতলেন আর্জেন্টিনার মেসি–দি মারিয়া বাহিনী। মহাদেশীয় শিরোপা, বিশ্বকাপ, আবার মহাদেশীয় শিরোপা—স্পেনের পর এই ত্রিমুকুট জেতা দ্বিতীয় দল এখন আর্জেন্টিনা।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার এই টুর্নামেন্ট জয়ের ফলে টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা এবং এর মাধ্যমে উরুগুয়েকে টপকে আর্জেন্টিনা মহাদেশীয় এ টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ১৬ বার জিতল।

মিয়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে আজ ১৫ জুলাই সোমবার সকালে ফাইনাল মহারণ শুরুর আগেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। তবে সেটা স্টেডিয়াম গেটের বাইরে। টিকিটবিহীন দর্শকদের হাঙ্গামার কারণে ম্যাচ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, ৭টা ২০ মিনিটে খেলা শুরু হয়। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় কোনো দল গোল করতে পারেনি। এতে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় কোপা আমেরিকার ৪৮তম আসরের ফাইনাল।

কোপা আমেরিকার আজকের এই ফাইনাল ম্যাচে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা লাউতারো মার্টিনেজ মাঠে নেমেছিলেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। তিনিই মাচ্যের ১১২ মিনিটে আর্জেন্টিনার পক্ষে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করে ফাইনালের ট্রফি এনে দেন। দুর্দান্ত এক শটে ভাঙেন ডেডলক। ম্যাচের ১১১ মিনিটে লিড পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল পাঠিয়েছিলেন জিওভানি লো সেলসো। বদলি নামা এই মিডফিল্ডারের সেই পাস খুঁজে নেয় লাউতারো মার্টিনেজকে। সেখান থেকে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে বল জালে পাঠান লাউতারো মার্টিনেজ। চলতি আসরে এটি তার ৫ম গোল। লাউতারো মার্টিনেজের এই গোল ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। নিজেদের ইতিহাসের ১৬তম কোপা আমেরিকার শিরোপা নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল করার সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মন্টিয়েলের ক্রস থেকে পা ছোঁয়ালেও তা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আলভারেজ। ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় কলম্বিয়া। লুইস ডিয়াজের গড়ানো শট ঠেকিয়ে দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

পরের মিনিটেই রদ্রিগেজের বাড়নো বলে করডোভা শট করলে তার বারের ঠিক পাশ দিয়ে চলে যায়। যার ফলে এবারও হতাশ হতে হয় কলম্বিয়াকে। ১৩তম মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় কলম্বিয়া। এবার রদ্রিগেজের বাড়ানো বলে কুয়েস্টা হেড করলে তা সহজে তালুবন্দী করেন মার্টিনেজ।

৩৩তম মিনিটে দারুন এক শট করেন লারমা। তবে মার্টিনেজের হাতে লেগে বল মাঠের বাহিরে চলে যায়। বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারায় গোলশূন্য বিরতিতে যেতে হয় দুইদলকে।

এরপর ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে, ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়েও গোল করতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার। ১০ মিনিট পর, ম্যাচের ৫৮ মিনিটের দিকে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। এবার ডি মারিয়ার শট অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক।

ম্যাচের ৬৫তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আর্জেন্টিনা। প্রবল চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন লিওনেল মেসি। এরপর দুই দলই পাল্টাপাল্টি আরও বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোল করতে পারেনি কেউ। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা গোলশূন্য ড্রো হয়। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

ম্যাচের ৯৫ মিনিটে দারুণ একটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। এ সময় রদ্রিগো ডি পল ডি বক্সের মধ্যে নিকোলাস গঞ্জালেসকে বল বাড়িয়ে দেন। তিনি বল পেয়েই দ্রুত শট নেন। কিন্তু কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস দ্রুত বলের লাইনে এসে ঝাপিয়ে পড়ে তালুবন্দি করেন বল।

ম্যাচের ১০৮তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়াও। তবে, লিসান্দ্রোর অসাধারণ ডিফেন্ডিংয়ে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয় ১১২তম মিনিটে। লে সেলসোর বাড়ানো বলে দারুণ একটি গোল করে ১-০ ব্যবধানে আর্জেন্টিনার বিজয় নিশ্চিত করেন বদলি খেলোয়াড় মার্টিনেজ। এই গোলেই কোপা আমেরিকার টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় এবং সমর্থক ও ভক্তরা।

শুধু তাই নয়, এই শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ ১৬টি শিরোপা ঘরে তুললো। এতদিন তারা উরুগুয়ের সমান সংখ্যক ১৫টি কোপা আমেরিকা জিতেছিল। সূত্র: অনলাইন নিউজ।