ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪
বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক
গতকাল ০৬ জুলাই ২০২৪, রোজ শনিবার রাতে, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ এর কোয়ার্টার ফাইনালে ডাসেলডর্ফে টাইব্রেকারে সুইজারর্যান্ডকে হারিয়ে ৫–৩ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ১২০ মিনিটের মাঠের খেলায় ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ১–১ গোলে ড্র হয়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়।
টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডের আলেক্সান্ডার–আর্নল্ডসহ পাঁচজনই সুইস গোলকিপারকে পরাস্ত করে বল গোলপোস্টের জালে জড়িয়ে দেন। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের মানুয়েল আকাঞ্জির শট আটকে দেন ইংলিশ গোলকিপার জর্ডান পিকপোর্ড। গোলকিপারের এই সাফল্যে ইংল্যান্ড জয়লাভ করে। ফলে ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক গোলকিপার জর্ডান পিকপোর্ড। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ৫৮ বছরের মধ্যে প্রথমবার বড় কোনো আসরের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন টিকে থাকলো ইংলিশদের। আগামী ১০ জুলাই বুধবার সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস।
ইংল্যান্ড টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে উঠলেও, মাঠের খেলায় বেশিরভাগ সময় চাপে ছিল ইংলিশ ফুটবলাররা। ইংল্যান্ডের মূল আক্রমণকারী হ্যারি কেইন এই ম্যাচে কোনো প্রভাবই রাখতে পারেননি। একটা পর্যায়ে ইংলিশ গ্যালারি থেকে তাঁকে উঠিয়ে নেওয়ার স্লোগানও শুরু হয়ে যায়। কেইনের তুলনায় জুড বেলিংহাম ভালো খেলেছেন। কিন্তু তিনিও প্রত্যাশিত মানে ছিলেন না।
পুরো ম্যাচে ইংল্যান্ডকে বারবার আশা জাগিয়েছেন বুকায়ো সাকা। বেশ কয়েকবার বল নিয়ে সুইজারল্যান্ড রক্ষণভাগে ঢুকে পড়ে, সুইসদের হুমকির মুখে ফেলেন এই আর্সেনাল ফরোয়ার্ড।
কিন্তু তারপরও ম্যাচে প্রথম গোল সুইজারল্যান্ডই করেছে। ৭৫ মিনিটে রুবেন ভারগাস বক্সের এক পাশ থেকে গোলমুখে যে বলটি বাড়ান, সেটি রুখে দেওয়ার সুযোগ ছিল জন স্টোনসের। কিন্তু ইংলিশ সেন্টারব্যাক সেটিতে পা ছোঁয়াতে পারলেও,, বলের গতিপথ বদলাতে পারেননি। গোলমুখে থাকা ব্রিল এমবোলো সুযোগ কাজে লাগিয়ে বল ইংল্যান্ডের জালে জড়ান। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড।
গোল হজমের পর, দ্রুত কোল পালমার, এবেরেচি এজে ও লুক শকে বদলি হিসেবে নামান ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। সেটির সুফল আসে পাঁচ মিনিটের মধ্যে। ডান পাশ থেকে আর্সেনাল সতীর্থ ডেকলাইন রাইসের বাড়ানো বল ধরে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে বল সুইজারল্যান্ডের জালে পাঠান ইংল্যান্ডের সাকা। ফলে ১-১ গোলে ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে সমতা আসে।
সমতা আনার পর ইংল্যান্ডের আক্রমণেও ধার বাড়ে। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের বাকি সময়ে, এমনকী অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও কোনো দল আর গোল করতে পারেনি। ফলে খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়। টাইব্রেকারে সুইস খেলোয়াড় আকাঞ্জি গোল মিস করেন এবং ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড একটি গোল সেভ করে ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে পৌঁছে দেন।
বড় টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালের বাঁধা পেরুনোর অপেক্ষা আরো দীর্ঘ হলো সুইজারল্যান্ডের। এনিয়ে সেমিফাইনালের পথে পাঁচবার বাঁধাগ্রস্থ হলো তারা।
ইউরোতে এর আগে পাঁচটি পেনাল্টি শ্যুট আউটের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ী হয়েছিল ইংল্যান্ড। এর মধ্যে তিন বছর আগে ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে ম্যাচটিও রয়েছে। কিন্তু গতকাল সবকটি শটে সফল হয়ে শেষ চারের টিকেট পেয়েছে। ইউরো ২০২০ সালের ফাইনালে পেনাল্টি মিস করা সাকা গতকাল নিজের শটটি গোলে পরিণত করে কিছুটা হলেও নিজেকে শোধরানোর সুযোগ পেয়েছেন।
ম্যাচ শেষে সাকা বলেছেন, ‘আমার জন্য এটা একটি সুযোগ ছিল। একবার ব্যর্থ হলেও সেই একই পজিশনে আবারো আসার সুযোগ হলে তা কাজে লাগনোর থেকে বড় কিছু আর হতে পারেনা। আমরা বিশ্বাস করি প্রিমিয়ার লিগসহ সারা বিশ্বে আমাদের দলে সেরা পেনাল্টি শ্যুটার রয়েছে। পেনাল্টির সুযোগ আসলে আমরা দারুণ আত্মবিশ্বাস অনুভব করি। যেটা আজ আমরা প্রমাণ করেছি। পাঁচটি শটের পাঁচটিতেই আমরা গোল করে সেমিফাইনালের টিকেট পেয়েছি।’
ম্যাচ সেরা সাকা আরো বলেন, ‘আমরা জানি আর মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জীবন বদলে ফেলতে পারবো। যা আগে কখনো হয়নি, তেমন ইতিহাস আমরা রচনা করতে চাই।’ এখন দেখা যাক, গত আসরের রানার্সআপ ইংল্যান্ড আগামী ১০ জুলাই বুধবার নেদারল্যান্ডের সঙ্গে সেমিফাইনাল লড়াইয়ে কী করে । সূত্র: অনলাইন নিউজ।