বাঙালিনিউজ লাইফস্টাইল ডেস্ক
২৪ ঘণ্টায় দেহের ওপর উপকারী প্রভাব ফেলতে সাত থেকে আট ঘণ্টার ঘুমের যেমন প্রয়োজন তেমনি শারীরিক নানান সমস্যা থেকে রেহাই পেতে শোয়ার ভঙ্গিও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। হাত-পা ছড়িয়ে বিছানার মাঝে বা গুটিসুটি মেরে বালিশ জড়িয়ে শোয়া- ঘুমানোর ক্ষেত্রে একেক জনের ভঙ্গি থাকে একেক রকম।
পিঠে বা চিত হয়ে শোওয়া-
পিঠ, কাঁধ ও ঘাড়ের ব্যথা কমায় এ পদ্ধতি: ফ্লোডিডা’র ‘ডেলরে বিচ’য়ের ‘স্লিপ সায়েন্স অ্যাকাডেমি’র প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘দ্যা স্লিপ অ্যাডভান্টেজ: অপ্টিমাইজ ইওর নাইট টু উইন ইওর ডে’র লেখক ডেভিন বার্ক রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন “চিত হয়ে শোয়ার কারণে পিঠ ও কাঁধ সমতল ভারসাম্য বজায় রাখে।”
ফলে পিঠের ব্যথা কমে এবং হাঁটুর নিচে বালিশ রাখা এক্ষেত্রে আরাম দিতে পারে।
চোখের শুষ্কতা কমায়: ২০১৮ সালে কর্নিয়া জার্নালে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘নাসও ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’ পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শুষ্ক চোখের সমস্যা রয়েছে তাদের অধিকাংশই পাশ ফিরে অথবা পেটে ভর দিয়ে ঘুমান।
সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বলা যায়, পিঠে ভর দিয়ে শোয়া চোখের ওপর বালিশের চাপ সৃষ্টি করে না। ফলে অশ্রু গ্রন্থিতে বাড়তি চাপ না পড়ায় এর স্বাভাবিকতা বজায় থাকে।
বলিরেখা কমাতে পারে: পিঠে ভর দিয়ে শোয়ার ফলে মধ্যাকর্ষ বল অনুকূলে থাকার জন্য ত্বক সুন্দর ও মসৃণ থাকে। পাশ ফিরে বা উপুর হয়ে শোয়া থেকে ত্বকে বলিরেখা সৃষ্টি হয় আ বালিশের কভারও ত্বকে সূক্ষ ভাঁজের সৃষ্টি করতে পারে।
পাশ ফিরে শোয়া
নিদ্রাহীনতা দূর করতে পারে: পাশ ফিরে শোয়া শ্বাসনালীকে উন্মুক্ত রাখে। ফলে শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া সহজ হয়। অন্যদিকে পিঠে শোয়া গলার ওপরের পেশিকে প্রশমিত করে। যে কারণে অক্সিজেন ফুসফুসে পৌঁছাতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
“এর ফলে নাঁক ডাকার সমস্যার পাশাপাশি নিদ্রাহীনতার সমস্যাও দেখা দেয়” একই প্রতিবেদনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্ডিয়ান স্লিপ সেন্টার’য়ের পরিচালক এবং মার্কিন ‘স্লিপ ফাউন্ডেশন’য়ের মেডিকেল রিভিউ বিশেষজ্ঞ অভিনব সিং।
হজম ও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমায়: ‘দি আমেরিকান জার্নাল অব গ্যাসট্রোএন্টেরোলোজি’তে প্রকাশিত ছোট এক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য ভঙ্গিতে শোয়ার তুলনায় বাম পাশ ফিরে শোয়ার ফলে পাকস্থলীতে বাড়তি অ্যাসিড পরিষ্কারে সহায়তা করে; যা বুক জ্বালাপোড়া কমায়।
আলৎঝেইমার’র প্রতিরোধ করতে পারে: ২০১৫ সালের নিউ ইয়র্কের ‘স্টনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি’র সমীক্ষায় দেখা গেছে পাশ ফিরে শোয়া মস্তিষ্কের বিষাক্ত উপাদান দূর করতে সহায়তা করে যা আলৎঝাইমার’স রোগের ঝুঁকি কমায়।
যদিও এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
উপুর হয়ে বা পেটে চাপ দিয়ে ঘুমানো
উপুর হয়ে শোয়া নাক ডাকা ও কিছু ঘুমের সমস্যা কমাতে পারে। তবে এভাবে শোয়া ঘাড় ও পিঠে ব্যথা সৃষ্টি করে।
শোয়ার পদ্ধতি পরিবর্তনের উপায়
সিং বলেন, “শোয়ার ধরন পরিবর্তন করতে ভিন্ন ম্যাট্র্যাস অথবা বালিশের প্রয়োজন।”
তাছাড়া বিছানার আশপাশে বালিশ রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেও শোয়ার ভঙ্গিতে পরিবর্তন আনা যায়।
“গর্ভবতী নারীরা এই পদ্ধতিতে সহজেই শোয়ার ভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে পারেন”- বলেন তিনি।
সূত্র: বিডি নিউজ ২৪