বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকে বসবেন তিনি। গতকাল ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ রোজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প এ কথা বলেন। ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ ও পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলে কাজ করতে তিনি দ্রুত পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
গত বছর ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রচারে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এখন উপদেষ্টারা বলছেন, যুদ্ধ বন্ধে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে। গত ২০ জানুয়ারি ২০২৫ রোজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প।
সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চলমান সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সত্যিই চাই, শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে দেখা করে যুদ্ধ বন্ধ করি।’ ট্রাম্প বলেন, ‘অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে নয় বা অন্য কিছুর দিক থেকে নয়, এ যুদ্ধে লাখ লাখ জীবন নষ্ট হচ্ছে, এই দৃষ্টিকোণ থেকে। আমাদের সত্যিই সেই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।’
পরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তিনি পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি, পুতিন আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমরা যত দ্রুত সম্ভব, তা করব। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনারা মারা যাচ্ছে।’
দাভোসে বক্তৃতায় ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করতে চান। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি শান্তিচুক্তির খসড়া তৈরি হচ্ছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এ সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেন, রাশিয়া শান্তিচুক্তিতে রাজি না হলে ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা দেবে ওয়াশিংটন।
এর আগে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেওয়া হয়, পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলে কাজ করতে চান তিনি। রাশিয়া ও চীন এতে সম্মত হবে বলেও আশা করেন তিনি।
‘বুদ্ধিমান ব্যক্তি’
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উনকে ‘স্মার্ট গাই’ বা বুদ্ধিমান ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর আগে তিনি কিমের সঙ্গে তিনবার বৈঠক করেছিলেন। নতুন করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আবার কিমের সঙ্গে বৈঠক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ কথা বলেন।
২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প–পূর্ববর্তী প্রশাসনে কিমের সঙ্গে রিপাবলিকানদের বিরল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করা নিয়ে কোনো চুক্তি করতে পারেনি ওয়াশিংটন।
ফক্স নিউজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি আবার কিমের সঙ্গে আলোচনা করবেন কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘অবশ্যই, আমি আলোচনা করব। কিম আমাকে পছন্দ করে।’
ট্রাম্প তাঁর সাক্ষাৎকারে প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টার কথা স্মরণ করে বলেন, চুক্তির খুব কাছাকাছি ছিলাম। পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলে আমি পুতিনের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলতাম, কিন্তু বাজে একটা নির্বাচনে আমাদের ব্যাঘাত ঘটে।’ ট্রাম্প ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা বলেন। ওই নির্বাচনে তিনি জো বাইডেনের কাছে হেরে যান।
চীনের ওপর কর নয়
ট্রাম্প বলেছেন, গত সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। তাঁদের ওই আলোচনা ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। তিনি আশা করছেন, ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে। এতে চীনের পণ্যে শুল্কারোপ প্রয়োজন পড়বে না। গত সোমবার ট্রাম্প ও সির ফোনে কথা হয়। এতে তাঁরা বাণিজ্য, টিকটক ও তাইওয়ান প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন।