বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
গতকাল ৩০ জুন ২০২৪ রোজ রোববার, ফ্রান্সে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, এই আগাম নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভোট পড়েছে। সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয় এবং বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। দেশটিতে এবারে মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ।দেশটির দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্র এই দাবি করেছে।
এরআগে প্রার্থীরা স্থানীয় সময় গত ২৮ জুন শুক্রবার মধ্যরাতে টানা তিন-সপ্তাহের প্রচার শেষ করেছে।
এ বিষয়ে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল ভোটের দিন দুপুর পর্যন্ত দেশজুড়ে মোট ভোটারের অন্তত ২৬ ভাগ ভোট পড়েছে। ভোট প্রদানের এই হার গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটির গত নির্বাচন অর্থাৎ ২০২২ সালের নির্বাচনে দুপুর পর্যন্ত ১৮.৪৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এবার মনে হচ্ছে, ভোট না দেওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসছেন ফরাসিরা।
এবারের ভোট প্রদানের হার নিয়ে ইপসোস পোলিং ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ম্যাথিউ গ্যালার্ড বলেছেন, ‘১৯৮১ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর এবারই ভোটের হার সর্বোচ্চ ।’
ভোটের হারে সবচেয়ে বড় চমক ছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ২০২২ সালের নির্বাচনে দুপুর পর্যন্ত প্যারিসে ভোট পড়েছিল মাত্র ১২.৮ শতাংশ। এবার গণমাধ্যমগুলোর ভবিষ্যদ্বাণীকে ভুল প্রমাণিত করে দুপুর পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়েছে ২৫.৪৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটদানের এমন হার ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী বিকল্প শক্তির উত্থান ঘটাতে পারে। বিভিন্ন জরিপেও এমন আভাস পাওয়া গেছে। প্রায় সবগুলো জরিপই বলছে, এবার মেরিন লে পেনের নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী দল আরএন প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনেও ফ্রান্সে জয়ী হয়েছে মেরিন ও জর্ডানের দল আরএন। জর্ডান বারডেলার দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) বেশ এগিয়ে রয়েছে।
জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ইমানুয়েল মাখোঁ সরকারের প্রতি ফ্রান্সের জনগণের অসন্তোষ বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট মাখোঁ মূল্যস্ফীতি কমানোর আশ্বাস দিলেও অভিবাসনবিরোধী এবং কট্টর ডানপন্থী আরএন দলের প্রতিই সাধারণ মানুষের সমর্থন বেড়েছে বলে জরিপে দাবি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ৫৭৭টি আসন। গতকাল ৩০ জুন রোববার প্রথম দফার ভোটের পর আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় তথা সর্বশেষ দফা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন জনমত জরিপ রিপোর্ট বলছে, এবার নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে কট্টোরপন্থী আরএন। তবে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি-না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী দল তৃতীয় স্থানে থাকবে বলে জরিপগুলোতে আভাস দেওয়া হয়েছে। দেশটির ক্ষমতাসীন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোট পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষ জাতীয় পরিষদে এবার অর্ধেকের বেশি আসন হারাতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন তিনি। নির্বাচন প্রসঙ্গে মাখোঁ বলেছেন, যে দলই জিতুক, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করবেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৭ সাল পর্যন্ত মাখোঁর সরকার পরিচালনার মেয়াদ আছে। সূত্র: বাসস, অনলাইন নিউজ।