প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কোনো সফলতা আসেনি, দাবি মির্জা ফখরুলের

Spread the love

বাঙালিনিউজ, রাজনীতিডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনের ভারত সফর শেষে গতকাল ২২ জুন ২০২৪ শনিবার দেশে ফিরেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই ভারত সফরে কোনো সফলতা আসেনি বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সফরে নিজেদের অধিকার, আন্তর্জাতিক আইনের অধিকারের কথাগুলো সরকার বলতে ব্যর্থ হয়েছে।

আজ ২৩ জুন ২০২৪ রোজ রোববার, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ জুন শুক্রবার বিকেলে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে যান এবং সফর শেষে গতকাল ২২ জুন শনিবার রাতে দেশে ফিরেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার এই নয়াদিল্লি সফর। তাঁর দু’দিনের সফরে দুই দেশের মধ্যে ৭টি নতুন, ৩টি নবায়নকৃতসহ ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সফরে ১০টি চুক্তি হয়েছে। বলা হচ্ছে, চুক্তিগুলোর বেশির ভাগ সমঝোতা স্মারক। অনেকগুলো তারা চুক্তি করবে, কারিগরি দল পাঠাবে। কিন্তু তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। বরং তিস্তা প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করার জন্য, বিনিয়োগ করার জন্য ভারত প্রস্তাব করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এ ভারত সফরে কোনো সফলতা দেখছেন না বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির মহাসচিবের দাবি, সরকার ভারতের সেবাদাসে পরিণত হয়েছে। শুধু ভারত নয়, আশপাশের সব প্রতিবেশী দেশের কাছে তারা পুরোপুরি মাথা নিচু করে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে। মিয়ানমার থেকে গুলি আসে, জবাবটাও পর্যন্ত তারা দিতে পারে না।

পুলিশের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যে বিবৃতি দিয়েছে, সেটার সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘পুলিশের অ্যাসোসিয়েশন থেকে একটা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের সত্য প্রকাশে তাদের হুমকি দিয়ে যে এই সত্য (পুলিশের দুর্নীতির খবর) প্রকাশ করা যাবে না। কারণ, এতে নাকি তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়।’তিনি আরও বলেন, সারা দেশের মানুষ জানে, পুলিশ বাহিনীর কিছু কিছু সদস্য কীভাবে এই সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিত্তবৈভবের দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। আজ ২৩ জুন রোববার খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে পেসমেকার বসানো হচ্ছে। তিনি হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, মেডিকেল বোর্ড বারবার বলছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাংলাদেশে করা সম্ভব নয়। বারবার এ কথাগুলো বিভিন্নভাবে বলা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে, পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সুশীল সমাজ, বিদেশি মিশনগুলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থাও বলেছে। কিন্তু ব্যক্তিগত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে, তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।

দোয়া মাহফিল অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী; ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল; জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ। খবর: প্রথম আলো।