বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
আজ ১২ জুলাই ২০২৪, রোজ শুক্রবার, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে গেছেন। প্রচণ্ড সরকারের বৃহত্তম দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট) সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর, তিনি সংসদে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
আস্থা ভোটে পরাজয়ের অর্থ হলো, ১৯ মাস ক্ষমতায় থাকার পর ৬৯ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। সেক্ষেত্রে এবার ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালের রাজনীতির আঙিনায় ফের নতুন করে কী পরিস্থতি তৈরি হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
জানা গেছে, ভোটাভুটিতে জয়ের জন্য আজ শুক্রবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের অর্ধেকেরও বেশি সদস্যের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রচণ্ড।
নেপাল পার্লামেন্টের স্পিকার দেব রাজ ঘিমিরের মতে, প্রচণ্ড তার পক্ষে ৬৩ টি ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে ১৯৪ জন সংসদ সদস্য প্রচণ্ডের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। ফলে প্রচণ্ড ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সিপিএন (ইউএমএল) সমর্থন প্রত্যাহার করে নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন জোট গঠনের ব্যাপারে সমঝোতার পর প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড সংসদে একটি আস্থা ভোটের প্রস্তাব উত্থাপন করতে বাধ্য হন।
জোটের মতে, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা খাদগা প্রসাদ ওলি নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
প্রচণ্ড ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি অসমাপ্ত নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে একটি নড়বড়ে শাসক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যেখানে তার দল তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল। কিন্তু তিনি একটি নতুন জোট গঠন করেন এবং এর নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হন। শরিকদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে নেতা হওয়ার পর থেকে পাঁচবার সংসদে আস্থা ভোট চাইতে হয়েছিল প্রচণ্ডকে।
২০০৬ সালে মাওবাদী গোষ্ঠী সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়ে মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর, নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রচণ্ড তৃতীয় দফা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সহিংস মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল এবং আরও অনেকের অবস্থা অজানা রয়ে গেছে।
মাওবাদীরা তাদের সশস্ত্র বিদ্রোহ ত্যাগ করে, ২০০৬ সালে জাতিসংঘের সহায়তায় শান্তি প্রক্রিয়ায় যোগ দেয় এবং মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করে। প্রচণ্ডের দল ২০০৮ সালে সর্বাধিক সংসদীয় আসন অর্জন করে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হন, কিন্তু রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে এক বছর পরে তিনি পদত্যাগ করেন। খবর: এপি, পিটিআই, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।