নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে ইউরোর ফাইনালে ইংল্যান্ড

Spread the love

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪

বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক

আজ ১১ জুলাই ২০২৪, রোজ বৃহস্পতিবার সকালে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪ এর সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ২–১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ফলে ইউরোর টানা দ্বিতীয় ফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড। এই জয়ে প্রথমবারের মতো নিজ দেশের বাইরে আয়োজিত কোনো বড় টুর্নামেন্টে ফাইনালে গেলো ইংল্যান্ড। আগের ফাইনালে ইতালির কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল গ্যারেথ সাউথগেটের দল ইংল্যান্ড। এবার সেই যন্ত্রণা ভোলার সুযোগ পাচ্ছে তারা। আগামী ১৪ জুলাই রোববার রাতে বার্লিনে অনুষ্ঠেয় ফাইনাল ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেন।

উয়েফা ইউরোর দ্বিতীয় সেমিফাইনাল আজ সিগনাল ইদুনা পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচের শুরুতে নেদারল্যান্ডস ভালোই করছিল। ডর্টমুন্ডের সিগনাল ইদুনা পার্কে দর্শকেরা স্থির হয়ে বসার আগেই ইংলিশ গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেন ডাচ তারকা জাভি সিমন্স। বক্সের কাছাকাছি জায়গায় ডেকলান রাইসের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ইংলিশ রক্ষণভাগ ভেদ করে গোলপোস্ট তাক করে কড়া শট করেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। সিমন্সের সেই শট থামানোর কোনো উপায় ছিল না ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের। ফলে ম্যাচের ৭ মিনিটেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।  এগিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য খেই হারিয়ে ফেলে তারা।

ম্যাচের শুরুতেই গোল খেয়ে কিছুটা হতাশ হলেও, দ্রুত জেগে ওঠার চেষ্টা করে ইংল্যান্ড। পরপর কয়েকবার আক্রমণে গিয়ে ডাচ রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দেয় তারা। তাদের এক আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ইংল্যান্ড পেনাল্টি পায় নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে।

ম্যাচের ১৬ মিনিটে উড়ে আসা বল ভলিতে জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন হ্যারি কেইন। কিন্তু শট নেওয়ার সময় ডামফ্রিসের পায়ে লেগে পড়ে যান বায়ার্ন মিউনিখ তারকা। তখন ফাউল না দিলেও কিছুক্ষণ পর ভিএআর চেক করতে যান রেফারি। সেখান থেকে এসে বাজান পেনাল্টির বাঁশি। ম্যাচের ১৮ মিনিটে সফল স্পট কিকে সমতা ফেরান কেইন। ডাচ গোলরক্ষক ঠিক জায়গায় ডাইভ দিলেও বল আগেই জাল ভেদ করে ফেলে। যদিও রেফারির এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ রয়েছে।

হ্যারি কেইন পেনাল্টি কিকে ১-১ গোলে নেদারল্যান্ডেসের সঙ্গে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান গোল হজম করার ১১ মিনিট পর। সমতায় ফেরার পর ইংল্যান্ড ছন্দ খুঁজে পায়।

ম্যাচের ২২তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। সতীর্থের পাস ধরে বল টেনে নিয়ে বক্সে কয়েকজনকে কাটিয়ে গোললাইনের কাছে গিয়ে ডান দিকে বাড়িয়ে দেন ফোডেন। বল ঠিকঠাক এগোলেও গোললাইনে সেটি থামিয়ে দেন ডামফ্রিস। ইংল্যান্ড গোলের আবেদন করলেও খেলা চালিয়ে যান রেফারি। পরবর্তীতে গোললাইন প্রযুক্তিতে দেখা যায় বলটি লাইন পার হয়নি।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের অনেকটা সময় তারা কর্তৃত্ব ধরে রাখে। বিরতির পর বল দখলে রেখে সুযোগ খুঁজতে থাকে ইংল্যান্ড। কিন্তু তাদের ব্যর্থতায় শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ডাচরা। শেষদিকে ম্যাচে ফিরে ডাচরা যদিও বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু গোল করতে পারেনি।

ম্যাচের ৬৫তম মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় ডাচরা। ফ্রিকিক থেকে উড়ে আসা বল কাছ থেকে শট নেন ফন ডাইক। তবে লাফিয়ে সেটি ঠেকিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে ভট ভেগহর্স্টের বক্সে দেওয়া দারুণ পাস ভলিতে জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন সিমন্স। তবে পিকফোর্ডের অসাধারণ সেভে রক্ষা পায় ইংলিশরা।

তিন মিনিট পর বল ডাচদের জালে পাঠায় ইংল্যান্ড। ডান দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে কাইল ওয়াকার ক্রস বাড়ান বক্সের মাঝামাঝি। অরক্ষিত বুকায়ো সাকা জালে বল পাঠালেও, অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। বাতিল হয় গোল। ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে সুযোগ পায় ডাচরা। আক্রমণে যাওয়া ভেগহর্স্ট কয়েকজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে যান। তবে সেখানে গুয়েহি দারুণ এক সেভে বাঁচান ইংলিশদের।

ম্যাচের ৯০ মিনিটে বদলি হয়ে নামা ইংল্যান্ডের ওয়াটকিন্স খেলার ভাগ্য নির্ধারণ করেন। ডেকলাইন রাইস থেকে নেওয়া বল বক্সে বাড়ান কোল পালমার। সেখানে থাকা ওয়াটকিন্স থ্রু বল ধরে ডাচ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জাল খুঁজে নেন নিখুঁত শটে। স্টেডিয়ামে থাকা দর্শক দাঁড়িয়ে দিতে থাকে হাততালি। আর ইংলিশ ফুটবলাররা ভাসেন উচ্ছ্বাসে। প্রথমবার তারা কোনো মেজর প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার আনন্দ প্রকাশ করেন এভাবেই। শেষ মিনিটে ইংলিশদের পক্ষে ওলি ওয়াটকিন্স গোল করার ফলে ২-১ গোলের ব্যবধানে ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। ইউরোর ফাইনালে শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে আগামী ১৫ জুলাই সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় বার্লিনে স্পেনের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। তথ্যসূত্র: অনলাইন নিউজ।