নির্বাচনী সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর হামলা, পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত

Spread the love

বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক

আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলা হয়েছে। তবে সন্দেভাজন হামলাকারী এক ব্যক্তি সিক্রেট সার্ভিস সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছে।

স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী প্রচারে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীর গুলিতে আহত হয়েছেন ট্রাম্প। তবে তা গুরুতর নয়। ট্রাম্প বলেছেন গুলি তার কানে লেগেছে এবং মনে হয়েছে বুলেট চামড়া ঘেঁষে চলে গেছে।

জেলা অ্যাটর্নি রিচার্ড গোলডিঞ্জার জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। একজন সমর্থকও নিহত হয়েছেন। সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে এ হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে এবং দুজন গুরুতর আহত হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, পেনসিলভানিয়ায় এক সমাবেশে ট্রাম্পের ওপর ‘দৃশ্যত এ প্রাণঘাতী হামলার’ চেষ্টা হয়েছে। হামলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গেছে, ট্রাম্প মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। এ সময় হঠাৎ গুলি শব্দ। সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চে বসে পড়েন ট্রাম্প। এ সময় তার সমর্থকরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প মেঝেতে বসে পড়ছেন এবং এরপর তিনি যখন দাঁড়ান তখন তার মুখের এক পাশে রক্ত দেখা যাচ্ছিলো। এরপর সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা ট্রাম্পকে দ্রুত একটি গাড়িতে তোলেন। এ সময় ট্রাম্পের কান ও গাল বেয়ে রক্ত পড়তে দেখা যায়। ওই গাড়িতে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের প্রচার শিবির বলেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তার আঘাত গুরুতর নয়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ট্রাম্প মঞ্চে ওঠার কিছুক্ষণ পরেই পাশের একটি ভবনের ছাদে ওঠেন সন্দেহভাজন হামলাকারী। তার হাতে একটি রাইফেল ছিল।

এদিকে ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বলেছেন, পেনসিলভানিয়ায় সহিংসতার ঘটনায় সবার নিন্দা জানানো উচিত।

বাইডেন বলেছেন, “এ ধরণের সহিংসতার কোন জায়গা আমেরিকায় নেই। এটা জঘন্য, জঘন্য। আমি নিশ্চিত করতে চাই যে আমাদের কাছে সব তথ্য আছে।”

বাইডেন আরও বলেছেন, হামলা সম্পর্কে তাকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। শিগগিরই ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তার খোঁজখবর নিতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের ঘটনা মেনে নিতে পারি না।’

তিনি নিরাপদ ও ভালো আছেন শুনে আমি কৃতজ্ঞ। আমি তার এবং তার পরিবার ও সমাবেশে যারা ছিলেন তাদের সবার জন্য প্রার্থনা করছি। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় জিল ও আমি সিক্রেট সার্ভিসের কাছে কৃতজ্ঞ”।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির সিক্রেট সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। হামলাকারী গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় তিনি তাঁদের ধন্যবাদ দেন।

সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে আমাদের দেশে এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারী সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। হামলাকারী নিহত হয়েছেন।’ পোস্টের শেষে ট্রাম্প বলেন, ‘ঈশ্বর আমেরিকার মঙ্গল করুন!’

গুলিতে ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে গেছে বলেও ওই পোস্টে জানিয়েছেন ট্রাম্প।  তিনি জানান, ‘হঠাৎ আমি শব্দ শুনি, সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারি অঘটন ঘটেছে। আর তখনই অনুভব করি গুলি আমার চামড়া ফুটো করে দিয়েছে। অনেক রক্ত পড়তে থাকে, আমি তখন বুঝতে পারি কী ঘটেছে।’

ট্রাম্প বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারে গুলিতে যিনি নিহত হয়েছেন, তাঁর পরিবারকে আমি সমবেদনা জানাই। গুরুতর আহত আরেকজনের পরিবারের প্রতিও আমি সমবেদনা জানাই।’

হামলার ঘটনার পর বিবৃতি দিয়েছেন ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প। সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইভাঙ্কা তাঁর বাবা ও হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের  প্রতি ভালোবাসা ও প্রার্থনা করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

ওই পোস্টে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় ইভাঙ্কা সিক্রেট সার্ভিস ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার দেশের জন্য প্রার্থনা করে যাব। বাবা তোমাকে ভালোবাসি, আজ এবং সব সময়। ‘  খবর: বিবিসি।