বাঙালিনিউজ, দেশডেস্ক
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে গতকাল ১৩ জুলাই ২০২৪ রোজ শনিবার ‘সন্তোষজনক’ বৈঠকের পরদিন, আজ ১৪ জুলাই রোববার অনলাইনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তবে, তারা আশা করছেন সরকার তাদের দাবি পূরণ করবে।
সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম মিডিয়াকে বলেন, ‘আজকের সভায় গতকালের বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। যেহেতু আমাদের দাবি পূরণ হয়নি, তাই আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। তবে, গতকালের বৈঠকে আমাদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। তাই আশা করছি আমাদের দাবি পূরণ হবে।’
এদিকে প্রতিদিনের মতো আজ ১৪ জুলাই রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে নিজেদের কথা তুলে ধরেন শিক্ষকেরা। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এই পেনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল করেছেন।
আজ ১৪ জুলাই রোববার দুপুর বারোটার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভুইয়া জানান, শিক্ষকরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে থাকতে চায় না। তবে আন্দোলন নিয়ে শিক্ষক ফেডারেশন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই চূড়ান্ত বলে জানান তিনি।
এদিকে, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় এমন ভুল কীভাবে করলো তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জিনাত হুদা বলেন, আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষকরা তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন আন্দোলন চলবে কি না। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, যাদের ভুলের জন্য শিক্ষাঙ্গনে এত অস্থিরতা তাদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’কর্মসূচি নিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করাসহ তিন দফা দাবিতে গত ০১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কারণে ক্লাস পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা নিতে যাওয়া মানুষেরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
এ রকম পরিস্থিতিতে গতকাল ১৩ জুলাই শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝি ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যুক্ত হবেন ২০২৫ সালের ০১ জুলাই।
তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ০১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক নয়। তাদের তিনটা দাবির মধ্যে এটাও একটা দাবি। সবার মতো তারাও ২০২৫ সালের ০১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ শিক্ষক নেতা এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, একটা বিষয়ে ভুল-বোঝাবুঝি মিটেছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম গতকাল ১৩ জুলাই মিডিয়াকে বলেছিলেন, তারা আলোচনা করেছেন। আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে। আলোচনা শুরু হওয়ায় তারা খুশি। সূত্র: অনলাইন নিউজ।