বাঙালিনিউজ, জাতীয়ডেস্ক
রাত পোহালেই আগামীকাল ১৭ জুন ২০২৪ রোজ সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমান সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব উপলক্ষে পরিবার–পরিজন, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করবেন প্রায় ৯০ ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর এই দেশবাসী। সে জন্য ইতিমধ্যে রাজধানী ছেড়ে প্রায় এক কোটি লোক বিভিন্ন জেলায় নিজেদের পৈত্রিক বাড়িতে ফিরেছেন। ফলে গত ক’দিনে ঢাকা শহর অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে।
ঈদের ছুটিতে পুরোপুরি পাল্টে গেছে রাজধানী ঢাকার চিরচেনা সেই দৃশ্য। শহরের সড়কগুলো প্রায় ফাঁকা। রাস্তায় অল্প কিছু গণপরিবহন। ফলে কোনো যানজট নেই। সড়ক-মহাসড়কগুলো দখলে নিয়েছে রিকশা। মাঝেমধ্যে কোরবানির গরু নিয়ে শাঁইশাঁই করে ছুটছে ছোট ছোট পিকআপ। এ যেন অন্য রকম দৃশ্য। নেই জ্যামে বসে বিরক্তির কোনো চিহ্ন।
যারা ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাননি, তারা মহা খুশি। পরিবার-পরিজন নিয়ে শেষ সময়ে কেনাকাটা করতে বেরিয়েছেন কেউ কেউ। ঢাকার ফাঁকা রাস্তায় আরামে চলতে পেরে খুশি নগরবাসী।’ এ বছর ঈদের ছুটির আগে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় অনেকে আগেই গ্রামে চলে গেছেন। যারা অফিস কিংবা অন্য কোনো কারণে যেতে পারেননি, তাদের অনেকে আজও ঢাকা ছেড়েছেন।
আজ ১৬ জুন রোববার বিকেলে মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, বাংলামোটর, শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর রোড, রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িল, বিজয়সরণি, মহাখালীসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রথম আলোর প্রতিবেদক লিখেছেন, রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। তবে শেষ সময়ে ঢাকা ছাড়তে আজ ১৬ জুন, ঈদের একদিন আগেও সারাদিন বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও নদীবন্দরের দিকে ছুটেছেন মানুষ। পাশাপাশি কোরবানির জন্যও পশুর হাট–কেন্দ্রিক মানুষের চলাচলও ছিল। ফলে এসব জায়গায় মানুষের চাপ কিছুটা বেশি ছিল। সেই সঙ্গে এসব এলাকার আশপাশের সড়কে যানজটও দেখা গেছে। অবশ্য অন্যান্য এলাকার চিত্র ছিল ভিন্ন।
রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় রাজধানীর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সহজেই চলে যাওয়া যাচ্ছে। মতিঝিল–কারওয়ান বাজার–গাবতলীর পথে ধীরগতির বাসগুলোর মধ্যে অন্যতম ৮ নম্বর পরিবহনের বাসগুলো। আজ রোববার সাড়ে পাঁচটার ৮ নম্বর পরিবহনের একটি বাসে উঠলে মতিঝিল থেকে কারওয়ান বাজার ১৮ মিনিটে নিয়ে আসে। সাধারণ কর্মদিবসে এই রাস্তায় আসতে এই পরিবহনের বাসের পৌনে এক ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগে।
ঢাকা ফাঁকা হওয়ায় বাসের যাত্রীও কম। ৮ নম্বর পরিবহনের সেই বাস অনেকক্ষণ মতিঝিলে অপেক্ষা করে মাত্র ১৫ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দেয়। যখন কারওয়ান বাজার আসে, তখন বাসে ১৩ জন যাত্রী ছিলেন।
ঢাকায় মানুষ কম থাকায় যাত্রীসংকটে আছে সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলোও। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মো. সেলিম নামের একজন সিএনজিচালক আজ সন্ধ্যায় বলেছেন, আজ সকালে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করে কোনো যাত্রী পাননি। পরে বিকেলে চারটার পর বের হয়ে একজন যাত্রী পেয়েছেন। রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে ধানমন্ডি ২৮ নম্বর আনা এই যাত্রীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া দিয়েছেন। এ ছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত তিনি আর কোনো যাত্রী পাননি। মো. সেলিম বলেন, খিলক্ষেত থেকে ধানমণ্ডি ২৮ নম্বরে আসতে তাঁর ২০ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। কর্মদিবসে হলে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগত। সূত্র: প্রথম আলো, কালেরকণ্ঠ।