বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্কে
এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে ভারতের ১১ বছর ধরে ট্রফি না পাওয়ার হতাশা কেটেছে। স্বাভাবিকভাবেই সারা ভারতজুড়ে চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ জয়ের উল্লাস। শিরোপা জিতে আইসিসি থেকে বড় অংকের প্রাইজমানি পেয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। এরপর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও দলের ক্রিকেটার, কোচ ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তাদের জন্য ১২৫ কোটি রুপি বা বাংলাদেশি টাকায় ১৭৫ কোটি রুপির বেশি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
১৭ বছর পর দ্বিতীয়বার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার আনন্দে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই পুরো দলের জন্য মোট ১২৫ কোটি রুপি অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। এর মধ্যে ক্রিকেট দলের ১৫ সদস্যের প্রত্যেকে পাবেন ৫ কোটি রুপি করে। তবে বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে থাকা সবাই একই পরিমাণ অর্থ পাচ্ছেন না। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়া দলটির মোট সদস্যসংখ্যা ৪২।
ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বিশ্বকাপ জয়ের পরপর ঘোষণা করা অর্থ পুরস্কারের কে কতটুকু পাবেন, সেটি চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ খেলোয়াড়ের সঙ্গে প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও পাচ্ছেন ৫ কোটি রুপি।
যশস্বী জয়সোয়াল, সঞ্জু স্যামসন ও যুজবেন্দ্র চাহাল—ভারতের বিশ্বকাপ দলে থাকলেও এই তিনজনের কেউই ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপজুড়ে দলের সঙ্গে ঘোরাঘুরিতেই সময় কেটেছে তাঁদের। মাঝেমধ্যে অন্যদের বদলি হিসেবে কিছুক্ষণের জন্য ফিল্ডিংই করেছেন শুধু। তবে ম্যাচ খেলতে না পারলেও ভারতের বিশ্বকাপ দলে থাকার সুবাদেই ৫ কোটি রুপি করে পুরস্কার পাবেন তারাও। অর্থাৎ একটি ম্যাচও না খেলে থাকলেও খেলোয়াড়রা সবাই সমান টাকা পাবেন। অর্থাৎ, ১৫ জন খেলোয়াড় ও প্রধান কোচসহ মোট ১৬ জন পাচ্ছে ১২৫ কোটি রুপির মধ্যে ৮০ কোটি রুপি।
কোচিং স্টাফের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর, ফিল্ডিং কোচ টি দিলিপ ও বোলিং কোচ পরশ মামব্রে পাবেন আড়াই কোটি রুপি করে। আর অজিত আগারকারের নেতৃত্বে খেলোয়াড় বাছাইকারী নির্বাচক কমিটির প্রত্যেকে পাবেন ১ কোটি রুপি করে।
স্যের বিশ্বকাপ দলে ছিলেন তিনজন ফিজিও থেরাপিস্ট, তিনজন থ্রোডাউন স্পেশালিস্ট, দুজন মালিশকারী এবং স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ। তাদের সবাইকে দেওয়া হবে ২ কোটি রুপি করে। দলের সঙ্গে নিয়মিত না থাকলেও রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে ডাক পাওয়া রিংকু সিং, শুবমান গিল, আবেশ খান ও খলিল আহমেদদের দেওয়া হবে ১ কোটি রুপি করে।
এ ছাড়া ভিডিও অ্যানালিস্ট, মিডিয়া অফিসারসহ বিসিসিআইয়ের স্টাফদেরও পুরস্কৃত করা হবে। এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র বলেছে, ‘খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের পুরস্কারের পরিমাণ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে ইনভয়েস (চালান) জমা দিতে বলা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ জয় শেষে ভারত দল প্রথম পা রাখে দিল্লিতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে ভারত দল যায় মুম্বাইয়ে। সেখানে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সঙ্গে দেখা হয় তাদের। বিসিসিআইয়ের বাইরে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের জন্য ১১ কোটি রুপি অর্থ পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারত সর্বশেষ আইসিসি টুর্নামেন্ট জিতেছিল ২০১৩ সালে। তখন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিজয়ী মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ১ কোটি রুপি করে অর্থ দিয়েছিল বিসিসিআই। সাপোর্ট স্টাফদের দেওয়া হয়েছিল ৩০ লাখ রুপি করে।
তার আগে, ২০১১ সালে ধোনির নেতৃত্বে ৫০ ওভারের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড়েরা পেয়েছিলেন ২ কোটি রুপি করে, সাপোর্ট স্টাফরা ৫০ লাখ এবং নির্বাচকেরা ২৫ লাখ করে।
আর ২০০৭ সালে প্রথম টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর পুরো দলকে ১২ কোটি রুপি দেওয়া হয়েছিল।
১৯৮৩ সালে প্রথম বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলকে কোনো অর্থ পুরস্কার দেয়নি বিসিসিআই। বোর্ডের কাছে পুরস্কার দেওয়ার মতো অর্থও ছিল না। তাই তহবিল গঠনের জন্য লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর অনুসারে, কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন দলের খেলোয়াড়দের ২৫ হাজার রুপি করে দেওয়া হয়েছিল সে সময়। সূত্র: প্রথম আলো সহ অন্য অনলাইন নিউজ।