ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ, নিহত ৬

Spread the love

কোটা সংস্কার আন্দোলন

বাঙালিনিউজ, রাজনীতিডেস্ক

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় দুইজন, চট্টগ্রামে তিনজন ও রংপুরে একজন নিহত রয়েছেন।

আজ ১৬ জুলাই ২০২৪, রোজ মঙ্গলবার দুপুরের পর, ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে আরও কয়েক শ’ মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, এখনো অনেক জায়গায় সংঘর্ষ চলছে।

বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এ সময় কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে হাতবোমার বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন।

চট্টগ্রামে নিহত তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন মো. ফারুক (৩২) ও মো. ওয়াসিম (২২)। ফারুক একটি আসবাবের দোকানের কর্মচারী এবং ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া আহত অন্তত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুজহাত ইমু মিডিয়াকে বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে ফারুকের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। ওয়াসিমের মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত অপরজনের পিঠেও গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

এদিকে আজ বিকেল ও সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা কলেজ ও সায়েন্স ল্যাব এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম–পরিচয় জানা যায়নি। দুজনেরই বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে পিটুনিতে গুরুতর আহত একজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সন্ধ্যায় সেখান থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই তরুণ আহত অবস্থায় ঢাকা সিটি কলেজের সামনে পড়ে ছিলেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে পাশের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিলে তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে জানায়, পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, সায়েন্সল্যাব এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন মারা গেছেন।

গতকাল ১৫ জুলাই সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে দুপুরে সায়েন্স ল্যাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা দুইটার দিকে ওই মিছিলে হামলা হয়। এর পর থেকে ওই এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এরই মধ্যে বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর সেখানে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রংপুরেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নিহত আবু সাঈদ (২২) রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

আজ ১৬ জুলাই মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে আহত হন আবু সাঈদ। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিকুল আরেফিন। সূত্র: প্রথম আলো।