বাঙালিনিউজ স্পোর্টস ডেস্ক
গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) এলিমিনেটর ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটে হারায় তামিম ইকবালের দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাটিং শেষে বড় পুঁজি গড়তে ব্যর্থ হয় চট্টগ্রাম। ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে থামে চট্টগ্রামের ইনিংস। জবাবে গ্যালারি ঠাসা মাঠে মাত্র ১৪.৫ ওভারে লক্ষ্য টপকে যায় বরিশাল। অর্ধশতক হাঁকান তামিম ইকবাল ও কাইল মেয়ার্স। ৪৩ বলে ৫২ রানের হার না মানা ইনিংসে খেলেন তামিম ইকবাল। ইনিংসে তিনি হাঁকান ৯টি চার।
ম্যাচে আরও একটি ফিফটি হাঁকালেন তামিম ইকবাল। আরও একবার ব্যাটে-বলে চমক দেখালেন কাইল মেয়ার্সও। এতে এলিমিনেটর ম্যাচে সহজ জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের টিকিট কাটলো ফরচুন বরিশাল।
চলতি বিপিএলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে চারশ ছুঁয়ে বরিশাল অধিনায়কের রান ম্যাচ শেষে ৪৪২। আর মেয়ার্স খেলেন বিধ্বংসী ইনিংস। মাত্র ২৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন এ ক্যারিবীয় ব্যাটার। ইনিংসে হাঁকান তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কা। এর আগে বল হাতে ৪ ওভারের স্পেলে ২৮ রানের দুই উইকেট নেন এ ম্যাচসেরা তারকা।
বরিশালের রান তাড়ার শুরুটা ভালো ছিল না। মৌসুমে প্রথমবার ওপেন করার সুযোগ পেয়ে সৌম্য সরকার প্রথম ওভারেই উইকেট বিলিয়ে দেন শুভাগত হোমকে রিভার্স সুইপ করার চেষ্টায়। পরের ওভারের প্রথম বলে সুযোগ দেন তামিমও। কিন্তু আল আমিন হোসেনের বলে থার্ডম্যান সীমানায় ক্যাচ নিতে পারেননি সৈকত আলী। উল্টো চার হয়ে যায় তা। জীবন পেয়ে ওই ওভারে আরও দুটি চার মারেন তামিম। পাওয়ার প্লেতে বরিশাল তোলে ৭৩ রান।
আগের তিন ম্যাচে ৪৬, ৪৮ ও ২৫ রানের ইনিংসের পর মেয়ার্স এবার ফিফটির দেখা পান ৫০ বলে। এরপরই অবশ্য বিলাল খানের বলে আউট হয়ে যান তিনি। তবে ততক্ষণে ম্যাচের উত্তেজনা একরকম শেষ। দশম ওভারেই ১০০ পেরিয়ে যায় বরিশাল। ১১ বছর পর বিপিএলে ফিরে ডেভিড মিলার কিছুটা ব্যাটিং অনুশীলন সেরে নেন কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে। ‘ফিনিশার’ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান অবশ্য ম্যাচ শেষ করতে পারেননি। ১৩ বলে ১৭ করে বিদায় নেন তিনি। মুশফিকুর রহীমকে নিয়ে কাজ শেষ করেন তামিম।
ম্যাচের প্রথম ভাগে চট্টগ্রামে ভোগান্তির শুরু ম্যাচের প্রায় শুরু থেকেই। দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন দারুণ ফর্মে থাকা তানজিদ হাসান। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের শর্ট বলে পুল করার চেষ্টায় সহজ ক্যাচ দিয়ে ২ রানে ফেরেন এই ওপেনার। একাদশে ফেরা ইমরানউজ্জামান তিনে নেমে ১৩ বল খেলে করতে পারেন কেবল ৭ রান। আরেকপ্রান্তে জশ ব্রাউনের ব্যাটিং ছিল অনেকটা ‘হট অ্যান্ড কোল্ড।’ বেশ কিছু ডট বল খেলেন অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটসম্যান, এর ফাঁকে খেলেন বড় শটও। তাইজুল ইসলামকে দুটি ছক্কা মারেন তিনি, মেয়ার্সকে একটি। দুটি চারও আসে তার ব্যাট থেকে। ওবেড ম্যাককয়ের বলে বিদায় নেন ২৪ বলে ৩৪ রান করে। চট্টগ্রাম আরেকটি বড় ধাক্কা খায় একটু পরই। মিডল অর্ডারের বড় ভরসা টম ব্রুস ফিরে যান ১১ বলে ১৭ রান করে। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান মেয়ার্স।
এরপর দায়িত্ব ছিল সৈকত আলী ও অধিনায়ক শুভাগত হোমের ওপর। কিন্তু দেশের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার পারেননি সময়ের দাবি মেটাতে। জেমস ফুলারকে দারুণ একটি ফ্লিক শটে ছক্কা মারার পর সৈকত (১১) ফিরতি ক্যাচ দেন তাইজুলকে। শুভাগত প্রথম বলেই জীবন পান ক্যাচ নিতে গিয়ে ম্যাককয় পিছলে পড়ায়। এরপর ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু থেমে যান ১৬ বলে ২৪ রান করে। মেয়ার্সের লেগ কাটারে উপড়ে যায় তার স্টাম্প। চট্টগ্রামের শেষ ভরসা ছিল রোমারিও শেফার্ড। পরপর দুটি চার আসে তার ব্যাট থেকে। তবে চাপের মধ্যে নিজের সহজাত ব্যাটিং তিনি করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বিপিএল অভিষিক্ত ইংলিশ পেসার জেমস ফুলারের নিচু হওয়া বলে ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার বিদায় নেন ১৬ বলে ১১ রান করে।
সূত্র: মানবজমিন