বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
দীর্ঘ ১ হাজার ৯০১ দিন, কারাগারে বন্দী থেকে আইনি লড়াইয়ের পর, গতকাল ২৪ জুন ২০২৪ রোজ সোমবার কারামুক্ত হয়েছেন বহুল আলোচিত উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। কারামুক্ত হয়েই তিনি যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন। এক এক্স বার্তায় উইকিলিকস এ তথ্য জানিয়েছে।
উইকিলিকসের বার্তায় বলা হয়েছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অ্যাসাঞ্জ সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছেছেন। ফৌজদারি অপরাধের দোষ স্বীকার করায় অ্যাসাঞ্জকে কারামুক্ত করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করা ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসের একটি আদালতে দায়ের হওয়া নথি অনুসারে অ্যাসাঞ্জ জাতীয় প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের একটি অভিযোগে দোষ স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন।
২০১০ ও ২০১১ সালে ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ গোপন সামরিক-কূটনৈতিক নথি ফাঁস করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ। এ ঘটনায় অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলার তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ।
পাঁচ বছর ধরে অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাজ্যের কারাগারে আটক ছিলেন। সেখান থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির অংশীদার সিবিএস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সমঝোতা চুক্তির শর্তমতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে থাকতে হবে না। এমনকি যুক্তরাজ্যের কারাগারে থাকার সময়কে তাঁর সাজা ভোগের সময় হিসেবেও বিবেচনা করা হবে।
এর আগে মার্কিন বিচার বিভাগের এক চিঠিতে বলা হয়েছে, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতে পারবেন।
এক্স বার্তায় উইকিলিকস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল ২৪ জুন সোমবার যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগার থেকে অ্যাসাঞ্জ বের হয়েছেন। এই কারাগারের একটি ছোট্ট প্রকোষ্ঠে ১ হাজার ৯০১ দিন আটক ছিলেন তিনি।
উইকিলিকস বলছে, কারাগার থেকে বেরিয়ে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে যান। গতকাল বিকেলে তাঁর ফ্লাইট ছাড়ে। এএফপির খবর বলছে, স্থানীয় সময় আগামীকাল ২৬ জুন বুধবার অ্যাসাঞ্জের যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের তত্ত্বাবধানে থাকা নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডসে পৌঁছানোর কথা। তাঁর ৬২ মাসের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে ব্রিটেনে যে পাঁচ বছর তিনি কারাভোগ করেছেন সেটিও এই সাজার অন্তর্ভুক্ত হবে। এর অর্থ হলো অ্যাসাঞ্জ নিজ দেশ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরতে পারবেন।
অ্যাসাঞ্জের ছোট একটি ভিডিও এক্সে পোস্ট করেছে উইকিলিকস। তাতে দেখা যায়, জিনস ও নীল শার্ট পরা অ্যাসাঞ্জ বিমানবন্দরের পথে রয়েছেন। তবে বিবিসি জানিয়েছে তাদের পক্ষ থেকে স্বাধীনভাবে ভিডিওটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা মরিস অ্যাসাঞ্জ এক্স পোস্টে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁরা (সমর্থকেরা) বছরের পর বছর ধরে একত্র হয়েছেন এবং দিনটিকে বাস্তবে পরিণত করেছেন। সূত্র: ইন্টারনেট।