বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক
প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে আজ অস্ট্রিয়া বনাম তুরস্ক ম্যাচ ছিল অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। খেলা শুরুর ৫৭ সেকেন্ডে এগিয়ে যায় তুরস্ক। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ায় তারা। দু’টি গোলই করেন দলের ডিফেন্ডার মেরি ডেমিরাল। তবে লড়াই ছাড়েনি অস্ট্রিয়া। এক গোল শোধ করে তারা। কিন্তু দ্বিতীয় গোল শোধ করতে পারেনি অস্ট্রিয়া। তুরস্কের মরিয়া ডিফেন্স অস্ট্রেয়াকে গোল করতে দেয়নি। ৯০ মিনিটের টান টান খেলা শেষে হার মানে অস্ট্রিয়া। আট নম্বর তথা শেষ দল হিসাবে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় তুরস্ক। শেষ আটে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে খেলবে তারা।
খেলা শুরুর ৫৭ সেকেন্ডের মাথায় অস্ট্রিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেয় তুরস্ক। নিরীহ কর্নার বার করতে গিয়ে গোলমাল করে ফেলেন অস্ট্রিয়ার ডিফেন্ডারেরা। বাউমগার্টনার ও পশের ভুল বোঝাবুঝির ফায়দা তোলে তুরস্ক। গোলরক্ষক পেন্টজ় কোনও রকমে বল বার করলেও ফিরতি বলে গোল করে তুরস্ককে এগিয়ে দেন মেরি ডেমিরাল। ইউরোর ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল করলেন তিনি।
পরের মিনিটেই প্রতিপক্ষ তুরস্কের সঙ্গে সমতায় ফেরার সুযোগ পায় অস্ট্রিয়া। বাউমগার্টনার পায়ে বল লাগাতে পারেননি। পোস্টের পাস দিয়ে বল বেরিয়ে যায়। খাতায়-কলমে খুব বড় দল না হলেও দুই দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছিল। অস্ট্রিয়া থ্রু বলের উপর বেশি নির্ভর করছিল। তুরস্কের আক্রমণ হচ্ছিল প্রান্ত ধরে।
দু’দলই বেশ কয়েক বার বিপক্ষ বক্সে ঢুকে পড়লেও গোল করতে পারেনি। তবে প্রথমার্ধ জুড়ে ওপেন ফুটবল হয়েছে। দু’দলই গোল করার চেষ্টা করেছে। প্রথমার্ধের একেবারে শেষে একটি ভালো সুযোগ পান সাবিৎজ়ার। গোল করতে পারেননি তিনি। ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় তুরস্ক।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কয়েকটি পরিবর্তন করেন অস্ট্রিয়ার কোচ। ফলে খেলার ধরন বদলে যায় তাদের। থ্রু বলের বদলে প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠতে শুরু করে অস্ট্রিয়া। ৫১ মিনিটে সমতা ফেরানোর সহজ সুযোগ পান আরনাউটোভিচ। গোলরক্ষককে একা পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন তিনি। পরের মিনিটেই লাইমার একক দক্ষতায় বক্সে ঢোকেন। তাঁর বাঁ পায়ের শট পোস্টের পাস দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিট আবার সুযোগ নষ্ট অস্ট্রিয়ার। এ বার বক্সে ঢুকে শট মারেন পশ। কিন্তু ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল বেরিয়ে যায়। একের পর এক আক্রমণে পুরোপুরি চাপে পড়ে যায় তুরস্কের রক্ষণভাগ।
এত সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেনি অস্ট্রিয়া। তার খেসারত দিতে হয় তাদের। ধাক্কা সামলে ১০ মিনিট পর থেকে খেলায় ফিরতে শুরু করে তুরস্ক। ৫৯ মিনিটের মাথায় কর্নার পায় তারা। সেই কর্নার থেকে হেডে আবার গোল করেন ডেমিরাল। দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে লাফিয়ে গোল করেন তিনি। সেট পিস কাজে লাগালে চাপের মাঝেও কী ভাবে খেলায় ফেরা যায় তা দেখাল তুরস্ক।
দু’গোলে পিছিয়ে পড়ায় পুরোপুরি ওপেন ফুটবল খেলতে শুরু করে অস্ট্রিয়া। হতাশ হয়নি তারা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে যে ফুটবল খেলছিল সেটাই খেলতে থাকে। আক্রমণাত্মক ফুটবল কাজে দেয়। ৬৬ মিনিটের মাথায় এক গোল শোধ করেন মাইকেল গ্রেগরিচ। কর্নার থেকে সতীর্থের করা হেড কাজে লাগিয়ে গোল করেন তিনি। দু’মিনিট পরে আবার বক্সে অরক্ষিত জায়গা থেকে হেড করেন গ্রেগরিচ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বল সরাসরি গোলরক্ষকের কাছে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরো খেলা তুরস্কের বক্সের বাইরে হয়। তুরস্কের সবাই রক্ষণভাগে নেমে যায়। ফলে অস্ট্রিয়ার পায়েই বলের সিংহভাগ দখল ছিল। দুই প্রান্ত ধরে বার বার আক্রমণের চেষ্টা করছিলেন সাবিৎজ়ারেরা। কিন্তু তুরস্কের মরিয়া রক্ষণভাগ গোল করতে দিচ্ছিল না। বক্সের বাইরে পায়ের জঙ্গলের মাঝখান থেকে গোল করতে পারছিল না অস্ট্রিয়া।
যতো সময় গড়াচ্ছিল, ততো ছটফট করছিলেন অস্ট্রিয়ার ফুটবলারেরা। সবই করছিলেন, কিন্তু গোল করতে পারছিলেন না তাঁরা। খেলার শেষ মিনিটে বাউমগার্টনারের হেড কোনও রকমে বাঁচান গুনক। নইলে খেলা গড়াত অতিরিক্ত সময়ে। শেষ পর্যন্ত ১-২ গোলে হেরে বিদায় নেয় অস্ট্রিয়া। ইউরোর শেষ আটে জায়গা করে নিল তুরস্ক। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।