বাঙালিনিউজ, বিশ্বডেস্ক
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে গত ৭ জুলাই ২০২৪, রোজ রোববার সড়ক দুর্ঘটনার পর গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৫ বাংলাদেশির লাশ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা জন্য পোশাকের নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। লাশ শনাক্তের পর শিগগিরই দেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হাজরা সাব্বির হোসেন।
বিডিনিউজ জানায়, হাজরা সাব্বির হোসেন বলেছেন, পাঁচজনকে নিয়ে গাড়িটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। লাশ পুরোপুরি ঝলসে গেছে। নিহতরা আজমানের যেখানে থাকতেন, সেখান থেকে তাদের পরিধেয় বস্ত্রের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ।
তিনি বলেন, নিহতদের লাশ শনাক্ত করে ‘আউটপাস ইস্যুর’জন্য দূতাবাস প্রসিকিউশনের অনুমোদন নেবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব লাশগুলো দেশে পাঠানো হবে।
স্থানীয় সময় রোববার আবুধাবিতে সড়ক দুর্ঘটনার পর গাড়িতে আগুন ধরে নিহত হন ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার পাঁচ প্রবাসী। নিহতরা হলেন গাড়িচালক নবাবগঞ্জ বালেঙ্গা এলাকার মুহাম্মদ লুতফরের ছেলে মুহাম্মদ রানা মিয়া (৩০), একই এলাকার মোহাম্মদ ইব্রাহিম শেখের ছেলে মুহাম্মদ ইবাদুল শেখ (৩৮), শেখ আরশাদের ছেলে মুহাম্মদ রাজু হোসেন (২৮), নবাবগঞ্জ রাজাপুর এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে মুহাম্মদ রাশেদ (৩২) ও ঢাকার দোহারের মো. মঞ্জুর ছেলে মো. হিরা মিয়া (২২)।
শ্রম কাউন্সিলর সাব্বির জানান, নিহতরা সবাই আজমান প্রদেশের ২ নম্বর নয়া সানাইয়া এলাকায় থাকতেন, পেশায় রঙ মিস্ত্রি।“পেইন্টিং কাজের ঠিকাদার মো. রানার সঙ্গে একটি সাইটে যাওয়ার সময় তারা গাড়িটি অগ্নিদগ্ধ হয়। তাদের লাশ বানিয়াস সেন্ট্রাল মর্চুয়ারিতে রাখা হয়েছে।”
গাড়িতে আগুন ধরার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোড ব্যারিয়ারে ধাক্কা খেয়ে আগুন লাগতে পারে। কিংবা গাড়ির ভেতর ধূমপান থেকে কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আগুন ধরে যেতে পারে।”দেশটির রাজধানী আবুধাবির শাহামা এলাকায় গত ৭ জুলাই ২০২৪, রোজ রবিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে দশটার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আবুধাবি ও দুবাইয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস শোক বার্তায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
নিহত রানার ছোট চাচা শহীদুল ইসলাম জানান, নিহত সবাই বৈধভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকলেও, নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ না করে অন্যত্র কাজ পাওয়া সাপেক্ষে বিভিন্ন কাজ করতেন। ঘটনার দিন তারা এক আরব ব্যক্তির ঘরে কাজ করার উদ্দেশ্যে আজমান থেকে আবুধাবিতে রওনা করলে পথিমধ্যে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হন। দুপুরে খবর পেলাম তারা অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন। স্থানীয় পুলিশ তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য তথ্য জমা দিতে আমাদের ফোন করেছিল। আমরা সেই অনুযায়ী নথিপত্র নিয়ে আবুধাবি গিয়ে সবকিছু জমা করেছি। তবে অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় লাশগুলো আমাদের দেখতে দেওয়া হয়নি।
আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হাজরা সাব্বির হোসেন জানান, ০৮ জুলাই সোমবার বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবির শ্রম কল্যাণ উইং দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনার তদন্তকারি সংস্থা মাফরাক হাইওয়ে ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। এই বিষয়ে মাফরাক হাইওয়ে ট্রাফিক বিভাগের সড়ক দুর্ঘটনা বিভাগের প্রধান মেজর আব্দুল করিমের সঙ্গেও আলাপ করেছে দূতাবাস। মৃতদেহের পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেলে তবেই মৃত্যুসনদ ইস্যু করা হবে। এরপর দ্রুত সময়ে মৃতদেহ দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। সূত্র: বিডিনিউজ ২৪.কম, বাংলাদেশ প্রতিদিন।