বাঙালিনিউজ, খেলারডেস্ক
গতকাল ১৫ জুন ২০২৪ শনিবার গ্রস আইলেটের সুপার এইট পৌঁছার ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া ও স্কটল্যান্ড। যদিও অস্ট্রেলিয়া আগেই সুপার এইটে পৌঁছে গেছে। কিন্তু স্কটল্যান্ডের জন্য এই ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার ম্যাচ। তাই সর্বাত্মক চেষ্টা করেও স্কটল্যান্ড তাদের পরাজয় ঠেকাতে পারেনি। আর তাদের পরাজয়ের ফলে নামিবিয়াকে হারানো ইংল্যান্ড পৌঁছে গেছে সুপার এইটে।
স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ফলে সুপার এইটে চলে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ফলে হৃদয় ভেঙেছে স্কটল্যান্ডের। কিন্তু এ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে অনেকটা সময় ধরে মোকাবেলা করেছে স্কটল্যান্ড। জর্জ মানসির ২৩ বলে ৩৫ রানের সঙ্গে ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেনের ৩৪ বলে ৬০ ও অধিনায়ক রিচি বেরিংটনের ৩১ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংসে স্কটল্যান্ড তোলে ২০ ওভারে ১৮০ রান।
স্কটল্যান্ডের রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতে তেমন গতি না পেলেও, দ্বিতীয় ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারের পর পাওয়ারপ্লের মধ্যে মিচেল মার্শকেও হারায় অস্ট্রেলিয়া। সেন্ট লুসিয়ায় কন্ডিশন ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ সহায়ক থাকলেও স্কটিশদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে খোলসবন্দী ছিল ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ১৩ ওভার শেষেও তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৯৩ রান, সে সময়ে স্কটল্যান্ড তুলেছিল ১২১ রান। কার্যত ১৪তম ওভারে ১৮ রান ওঠার পরই ম্যাচ কার্যত ঝুঁকে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার দিকে। মাইকেল লিস্কের শেষ তিন বলে স্টয়নিস মারেন দুই ছক্কা ও এক চার।
এরপরও শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৬০ রান। তবে বিশ্বকাপে রান তাড়ায় ম্যাচের এ সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট অস্ট্রেলিয়ার (১৬০.২)। শায়ান শরিফের করা ১৬তম ওভারের প্রথম তিন বলে তিন ছক্কায় হেড অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে দেন। ওই ওভারের চতুর্থ বলে হেড, পরের ওভারে টানা দুই চারের পর স্টয়নিসও ফেরেন। তবে টিম ডেভিডের ১৪ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ক্যামিওতে জয় নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার। শেষ ৪ বলে ৪ রান দরকার যখন, ডেভিডের ক্যাচ মিডউইকেটে ফেলেন ক্রিস সোল। স্কটল্যান্ডের শেষ সুযোগ ছিল সেটিই।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারে অ্যাশটন অ্যাগারের বলে বোল্ড হন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৫ রানে অপরাজিত থাকা মাইকেল জোনস। তবে দ্বিতীয় উইকেটে মানসি ও ম্যাকমুলেনের ৪৮ বলে ৮৯ রানের জুটিতে শক্ত ভিত পায় স্কটল্যান্ড। নবম ওভারে মানসির পর ১২তম ওভারে থামেন ম্যাকমুলেন।
ফিল্ডিংয়ে মোটেও সুবিধার দিন ছিল না অস্ট্রেলিয়ার, সহজ-কঠিন মিলিয়ে ৫টি ক্যাচ ফেলে তারা। এরপরও শেষ ৫ ওভারে ৪২ রানের বেশি তুলতে পারেনি স্কটল্যান্ড। ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও ইনিংসের পরের ভাগেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে মূলত পেরে ওঠেনি দলটি।
স্কটিশদের অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সুপার এইট নিশ্চিত হয়েছে আগেই। পরের পর্বের আগে জয়ের ছন্দ ধরে রাখার ব্যাপার তো ছিলই, অস্ট্রেলিয়ার সামনে ছিল ১৯৮৩ সালের পর আইসিসির সহযোগী কোনো সদস্যের বিপক্ষে না হারার ‘গর্ব’ ধরে রাখার ব্যাপারও। অন্যদিকে অ্যান্টিগায় বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে নামিবিয়াকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের অপেক্ষায় ছিল ইংল্যান্ড।
ট্রাভিস হেডের ৪৯ বলে ৬৮, মার্কাস স্টয়নিসের ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংসে ভর করে ২ বল ও ৫ উইকেট বাকি থাকতেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার জয়ে নেট রান রেটে স্কটল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকায় সপ্তম দল হিসেবে সুপার এইট নিশ্চিত হলো ইংল্যান্ডের। আগামীকাল ১৭ জুন ২০২৪ সোমবার ভোরে নেপালকে হারাতে পারলে অষ্টম দল হিসেবে সুপার এইটে যাবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
স্কটল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৮০/৫ (ম্যাকমুলেন ৬০, বেরিংটন ৪২, মানসি ৩৫, ক্রস ১৮; ম্যাক্সওয়েল ২/৪৪, জাম্পা ১/৩০, এলিস ১/৩৪, অ্যাগার ১/৩৯)
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.৪ ওভারে ১৮৬/৫ (হেড ৬৮, স্টয়নিস ৫৯, ডেভিড ২৪*; ওয়াট ২/৩৪, শরিফ ২/৪২, হুইল ১/২৮)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মার্কাস স্টয়নিস (অস্ট্রেলিয়া) সূত্র: ইন্টারনেট।